ভারতে মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে বাসমতি ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব বাজারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় প্রবাসীদের মধ্যে চালের জন্য হাহাকার পড়েছে।
সেখানকার সুপারশপগুলোতে চাল কিনতে চলছে কাড়াকাড়ি। এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় বাংলাদেশ, থাইল্যান্ডের মতো চাল রপ্তানি কমিয়েছে ভারত সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ লাখেরও বেশি ভারতীয় বাস করেন। স্বভাবতই এদের বেশিরভাগের কাছে ভাত ছাড়া খাবারকে অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়।
ফলে বাসমতি ছাড়া অন্য ধরনের চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবর সামনে আসতেই সুপারশপগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন তারা।
লম্বা লাইন পড়েছে চাল কেনার জন্য। কোথাও কোথাও সেই লাইন রাস্তাতেও চলে এসেছে। যে যতটা পারছেন চাল কিনে মজুত করছেন।
কোনো কোনো ক্রেতা একই আট থেকে ১০ ব্যাগ চাল সংগ্রহ করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে একজন ব্যক্তি এক ব্যাগ চালের বেশি না কেনার নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এরপরও খালি হয়েছে তাকগুলো। কানাডার পরিস্থিতিও একই। এসব এলাকায় চালের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
কিছুদিন আগেও যেসব দোকানে সাধারণ মানের ৯ কেজির চালের ব্যাগ ১৫ থেকে ১৬ ডলারে বিক্রি হতো, সেখানে এখন দাম হাঁকানো হচ্ছে প্রায় ৪৭ ডলার পর্যন্ত।
বিক্রেতারা বলছেন, ভারতের এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ছয় থেকে আট মাস। তাই কবে তারা নতুন করে চাল আমাদিন করতে পারবেন তা জানা নেই।
নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রেস্তারোঁ ব্যবসাতেও। চালের সংকটে এরইমধ্যে বেড়ে গেছে খাবারের দাম। এরপরও ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দায় বলছেন উদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, ভারত বাসমতি ছাড়া অন্য চাল রাপ্তানি বন্ধ করায় মানুষ বাসমতি চালের দিকে ঝুঁকছে। ফলে বাসমতি চালের ওপর চাপ বেড়ছে। এখানেই বড় ব্যবধান তৈরি হয়েছে।
মূলত গত এক বছরে ভারতের খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ শতাংশ। শেষ তিন মাসে যা পেরিয়ে গেছে সর্বোচ্চ সীমা।
এই অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাসমতি ছাড়া সব চাল রপ্তানি আপাতত বন্ধ রেখেছে ভারত।
বিশ্ববাজারে চাল রপ্তানিতে ভারতের অবদান প্রায় ৪০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে চাল পাওয়া যায়, তার সিংহভাগই যায় ভারত থেকে যায়।
এছাড়াও আমেরিকা-ইউরোপের বাজারে চাল রপ্তানি করে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোও। তবে উৎপাদন কম হওয়ায় এবার এসব দেশ থেকেও চাল রপ্তানি কমেছে।
একাত্তর/এআর