ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আসন্ন লোকসভা ভোটের আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শনিবার তিনি বলেছেন, এটি দেশের একটি আইন। তা অবশ্যই কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে কোনো সংশয় থাকাই উচিত নয়। ভোটের আগেই আইনটি কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
আর মাত্র দুই মাস পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভারতের পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন। ভোটের ঠিক আগে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিষয়টি সামনে আনলো বিজেপি।
প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আইনটি পাশ করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তখন পুরো ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল। সেই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ অংশের নারী-পুরুষসহ বিপুল সংখ্যক মুসলমানরাও।
নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও খ্রিষ্টানরা যদি ধর্মীয় সহিংসতার কারণে ভারতে এসে প্রবেশ করেন তাহলে তারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন।
ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই অর্থাৎ লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশের পর আইনটির বিলে অনুমোদন দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতিও। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ সংক্রান্ত আইনের ধারা তৈরি হয়নি বলে ভারতের প্রভাবশালী আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।
পত্রিকাটি লিখেছে, জানুয়ারি মাসে ওই আইনের ধারা তৈরির জন্য সাতবার সময় বৃদ্ধিতে সবুজ সংকেত দিয়েছিলো সংসদীয় সচিবালয়। সরকারি সূত্রের খবর, সেই কাজ শেষ হতে চলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে সাড়ে চার বছর ধরে বিষয়টি ঝুলে থাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে হিন্দু উদ্বাস্তু সমাজের একাংশের মধ্যে। লোকসভা ভোটের আগে তা প্রশমনের উদ্দেশ্যে সিএএ কার্যকরে সক্রিয় হতে পারে মোদী সরকার।
তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী শুরু থেকেই বলে আসছেন যে, তিনি এই রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেবেন না।
আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকরের বিরোধী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই গোটা প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা ন্যূনতম করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। ভাবা হয়েছে, নাগরিকত্ব পাওয়ার সামগ্রিক পরিকল্পনা অনলাইনের মাধ্যমে রূপায়ণের কথা।
ওই সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি আরো লিখেছে, একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ইচ্ছুকেরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী কোন সালে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, সেই তথ্য পোর্টালে দিতে হবে। ওই আবেদন খতিয়ে দেখে নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।