বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোতে। এসব দেশে ২০২৩ সালে মানুষ হতাহত ও অর্থনৈতিক ক্ষতির বেশির ভাগই হয়েছে বন্যা ও ঝড়ের কারণে। জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএমও এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের মূল আঘাত যাচ্ছে এশিয়ার ওপর দিয়ে। এই মহাদেশের দেশগুলোতে ২০২৩ সালে মানুষ হতাহত ও অর্থনৈতিক ক্ষতির বেশির ভাগই হয়েছে বন্যা ও ঝড়ের কারণে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলছে, একই সময়ে তাপদাহ বৃদ্ধির প্রভাবেও নাকাল ছিল এসব দেশের মানুষ।
মঙ্গলবার বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা -ডব্লিউএমও এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্বব্যাপী গড় উষ্ণতার চেয়ে দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়া। ১৯৬১ থেকে ১৯৯০ সালের গড় তাপমাত্রার চেয়ে শুধু ২০২৩ সালেই এই মহাদেশে উষ্ণতা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময়ও এশিয়ার দেশগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন্সসহ কোনো কোনো দেশ তাপদাহে বিপর্যস্ত। আবার চীন-পাকিস্তানসহ কোনোটিতে চরম বৃষ্টির সঙ্গে বন্যা দেখা দিয়েছে।
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডংয়ে ভারী বৃষ্টিতে দেখা দেয়া বন্যায় প্রায় এক লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে সরকার।
এদিকে, গত সপ্তাহে ভারী বৃষ্টি ও হঠাত বন্যায় অন্তত ১০০ জনের মৃত্যুর পর কিছু অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সরকার।
ডব্লিউএমও বলেছে, গত বছর এশিয়ায় ঘটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই বন্যা ও ঝড়। এতে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজারের বেশি মানুষের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৯০ লাখ মানুষ। বন্যা ছিল মৃত্যুর প্রধান কারণ।
এছাড়াও, গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে এশিয়ার হিমালয় পবর্তমালা এবং এই পর্বতমালার হিন্দুকুশ ও তিব্বত রেঞ্জের ২২ টি হিমবাহের মধ্যে অন্তত ২০টির বরফের মজুত ২০২৩ সালে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবহাওয়া কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে খানিকটা হলেও সহায়তা করবে। তবে এই মুহূর্তে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাস কেবল একটি বিকল্প নয়, বরং জরুরি কর্তব্য।