এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুক্তি মিলেছে লেবাননের মানুষের। হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরপরই দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। এসময় মিষ্টি, কেক খাইয়ে একে অপরকে জানায় অভিনন্দন। তাদের আশা, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিভীষিকাময় দিনের।
যুদ্ধবিরতির খবর শুনেই আনন্দ উদযাপনে লেবাননের বৈরুতসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় নেমে আসেন বহু মানুষ। এ সময় হাজার হাজার রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দ ভেসে আসছিল। কিন্তু তা যুদ্ধের নয়, উদযাপনের। তাদের হাতে পতাকা। স্লোগানে মুখরিত চারপাশ। লোকেদের হাতে মিষ্টি, কেক। একে অপরকে খাইয়ে আনন্দ উদযাপন। চোখে স্বস্তির পানি। যেন সহিংসতা একেবারে শেষ।
লেবানিজ এক নাগরিক বলেন, আমাদের বাড়ি লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে। সেখানকার অবস্থা খুবই খারাপ। শুনেছি আমরা বাড়ি ছেড়ে আসার পরদিনই সেখানে বোমা পড়েছে। এখন ফিরতে পারলে বাকিটা বুঝবো। ক্ষয়ক্ষতি যাই হয়েছে, আর না হোক সেটাই চাই।
বুধবার থেকে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দক্ষিণে ফিরতে শুরু করেছে লেবাননের মানুষ। এ সময় রাস্তায় গাড়ির সারি দাঁড়িয়ে যায়। ইসরাইলি সামরিক সতর্কতাকে উপেক্ষা করে মোটরবাইক এবং গাড়িতে উপকূলীয় শহর টায়ারে ফিরে আসতে শুরু করেছে বেসামরিক মানুষ।
তারা বলেন, যুদ্ধবিরতির খবর শুনে সবাই অনেক খুশি। আমরা নিজেদের গ্রামে ফিরতে পারবো ভেবেই ভালো লাগছে। আশা করছি আমাদের বাড়িটা অক্ষত আছে আর দ্রুতই সেখানে ফিরবো আমরা।
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহ অনেক কিছু হারিয়েছে। আপনজন, সম্পদ। ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়নি। আঘাত সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণনীয়। কিন্তু তারপরও বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির দিনটি ছিল উদযাপনের।
তাদের ভাষায়, যুদ্ধে আমাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রতিবেশীরা প্রাণ হারিয়েছে। এতো কিছুর পরও নিজেদের ঠিকানায় ফিরতে পারবো ভেবে অনেক ভালো লাগছে।
যদিও ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এবং হিজবুল্লাহ বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি ঘটবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তারা বলেন, কথা দিয়ে কথা না রাখা ইসরাইলের স্বভাবে আছে। তাই তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানালেও আসলে নিরাপদ বোধ করছি না। যেকোনো সময় আবারও কোনোরকম সতর্কতা ছাড়াই ওরা হামলা করতে পারে। তার জন্য আমরা সতর্ক রয়েছি।
লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দেশের দক্ষিণে মোতায়েন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে ফিরতে বিলম্ব করতে বলেছে।