ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলেই যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের ওপর শাস্তির খড়গ নেমে আসতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভোটের প্রচারেও বারবার কড়া অভিবাসন নীতি প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে এবার সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তৎপর হলেন এ ধনকুবের। এর ফলে প্রথম দফায় প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় কঠিন সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস ও আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন অভিবাসন এবং শুল্ক দফতর এরইমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীর তালিকা তৈরি করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
ওই তালিকার শুরুতেই রয়েছে ১৭ হাজার ৯৪০ জন ভারতীয় নাগরিকের নাম। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় সাত লাখ ২৫ হাজার। মেক্সিকো এবং এল সালভাডর ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে এত বেআইনি অভিবাসন হয়নি যুক্তরাষ্ট্রে।
আনন্দবাজার বলছে, শুধু অবৈধ অভিবাসীরাই নন, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়বে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা কয়েক লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূতের ভবিষ্যৎ।
মার্কিন সংবিধানে বলা আছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মালেই সে দেশটির নাগরিক। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই আইনটিই পাল্টে দিতে চাইছেন ট্রাম্প।
দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট হয়েই একটি ‘একজিকিউটিভ অর্ডার’-এ সই করতে পারেন ট্রাম্প। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে যে সব অভিবাসী সন্তান জন্মেছে, তারা ‘জন্মসূত্রে’ আর মার্কিন নাগরিক থাকবেন না।
নতুন আইনে মা বা বাবার মধ্যে অন্তত এক জন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলে তবেই সন্তান সে দেশে জন্মালে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব’ পাবে।
এদিকে ট্রাম্পের নিশানায় রয়েছেন আরও করেক লাখ মানুষ। যারা আইনসিদ্ধভাবে কোনো না কোনো ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস এবং কাজ করছেন। যাদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই বেশি।
ট্রাম্পের দাবি, ওই আইনি অভিবাসীরা আদতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কাজের সুযোগ কেড়ে নিচ্ছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত ছাড়াও বিশ্বের বহু দেশের নাগরিক অবৈধভাবে দেশটিতে বসবাস করছেন। তারাও এই নীতির আওতায় পড়বেন।