ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র মাওবাদীদের মধ্যে দুইটি বড় ধরনের সংঘর্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও অন্যরা মাওবাদী বিদ্রোহী। দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া ও বিজাপুর সীমান্তের জঙ্গলে এই সংঘর্ষ হয়।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দান্তেওয়াড়া সীমান্তের কাছে বিজাপুর জেলার গঙ্গালুর পুলিশ ফাঁড়ির অধীন এক জঙ্গলে স্থানীয় সময় সকালের দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে সেখানে মাওবাদী বিদ্রোহীদের উপস্থিতির তথ্য পেয়ে অভিযান চালান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুপক্ষের মধ্যে এদিন থেমে থেমে কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষের সময় গুলিতে বিজাপুর ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের-ডিআরজি এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তল্লাশি অভিযান এখনো চলছে।
ছত্তিশগড় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা এদিন সকালে গঙ্গালুর থানা এলাকায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন। গঙ্গালুর থানা বিজাপুর জেলায়। প্রথম থেকে এলাকা ঘিরে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়। পুলিশ দেখেই এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মাওবাদীরা। তাদের গুলিতে মারা যান ছত্তিশগড় জেলার রিজার্ভ গার্ডের এক পুলিশ কর্মী।
এখনও পর্যন্ত বীজাপুরের জঙ্গল থেকে সংঘর্ষে নিহত ১৮ মাওবাদীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে মাওবাদীদের ব্যবহৃত রাইফেল ও বিস্ফোরক। এখনও গুলির লড়াই বন্ধ হয়নি। কাঙ্কেরের জঙ্গল থেকে পাওয়া গিয়েছে আরও চার মাওবাদীর দেহ।
এর আগে বাঘেদের ডেরায় ঘাঁটি গেড়েছিল মাওবাদীরা। তাদের নিশ্চিহ্ন করতে মধ্যপ্রদেশের কানহা জাতীয় উদ্যানে তল্লাশি অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী।
দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে রক্তাক্ত হয় কানহা টাইগার রিজার্ভ। মধ্যপ্রদেশের এই বিখ্যাত বাঘের জঙ্গলে কোর রোববার দুপুরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক মাওবাদী নিহত হয়। বাকিদের ধরতে রোববার দুপুর থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত চিরুনি তল্লাশি চলে টাইগার রিজ়ার্ভের ভেতরসহ লাগোয়া এলাকায়।
আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই দেশ থেকে মাওবাদীদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে বলে হুঙ্কার দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চলতি বছরে ছত্তিষগড়ের বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে বড় সাফল্য পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের আগেই আমরা দেশ থেকে নকশালবাদকে নির্মূল করব। যাতে তাদের জন্য কোনও নাগরিককে প্রাণ হারাতে না হয়। এজন্য আমি আমার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছি।