জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে ভয়াবহ ও নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবার সংঘাতের শঙ্কা দেয়া দিয়েছে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’; যাকে বলা হচ্ছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-ত্যাইয়বের একটি ছায়া সংগঠন।
তবে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এই হামলায় অংশ নেয়া সাত জনের মধ্যে চার থেকে পাঁচজন পাকিস্তানের নাগরিক রয়েছেন। হামলার আগে তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতীয় নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে প্রবেশে করেছে। স্থানীয় লোকজন জঙ্গি দলটির গাইড হিসেবে কাজ করেছে।
ভারত সরকারের অভিযোগ, পাকিস্তান কাশ্মীরে চলমান সশস্ত্র বিদ্রোহকে সমর্থন দিচ্ছে। যদিও ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের ভাষ্য, কাশ্মীরের জনগণের প্রতি তারা শুধু কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে। পাকিস্তান পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার নিন্দাও জানিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে মঙ্গলবার পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারত জুড়ে চলছে উত্তেজনা। হামলাকারীদের পরিচয় জানতে চলছে অভিযান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, হামলায় অন্তত সাতজন জড়িত ছিলেন। যার মধ্যে চার থেকে পাঁচজন পাকিস্তানি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত হামলাকারীরা উর্দুতে কথা বলেছেন এবং তা পাকিস্তানের নির্দিষ্ট এলাকায় বলা হয়। অন্তত দুজন স্থানীয় বিদ্রোহী তাদের সহায়তা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টিআরএফ নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ভয়াবহ এ হামলার দায় স্বীকার করে । সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটির উত্থান হয় ২০১৯ সালে।
কাশ্মীরে হামলার একদিন পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। তারা বলেছে, এ হামলার সাথে পাকিস্তান জড়িত নয়। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এর সাথে পাকিস্তানের কোনো সংযোগ নেই। ভারতের কথিত রাজ্যগুলোতে- নাগাল্যান্ড থেকে কাশ্মীর, ছত্রিশগড়ে, মণিপুরে এবং দক্ষিণে বিদ্রোহ চলছে। এগুলো বিদেশি কোনো দেশের হস্তক্ষেপ নয়, স্থানীয় বিদ্রোহ বলেই দাবি করছেন তারা।
এছাড়া, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার যে হামলা হয়েছে সেটি সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচারের ফল। তিনি আরও বলেন, এই বিদ্রোহীরা তাদের অধিকার চাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, মুসলিমদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে।
এদিকে, কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শিগগির কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
তিনি বলেন, ভারত একটি পুরানো সভ্যতার বড় দেশ। এই ঘটনায় এখনই ভয় পাওয়া যাবে না। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই এই হামলায় জড়িতরা খুব শিগগির শক্তিশালী জবাব পাবে। এছাড়া, যারা এর পেছনে রয়েছে তাদেরকেও শাস্তি দেয়া হবে।
এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতা দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেন, এটা একটি পরিকল্পিত হামলা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ।