কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার কিছু সময় পর এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছিলো অখ্যাত সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। কিন্তু শুক্রবার কাশ্মীরের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে এবং আগের দাবির জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেছে।
সংগঠনটি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা, প্রমাণ ছাড়া তড়িঘড়ি করে দায় চাপানো ও কাশ্মীরি প্রতিরোধকে হেয় করার জন্য সাজানো অভিযানের অংশ’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে গোষ্ঠীটি দাবি করে, ঘটনার পরপরই তাদের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে অননুমোদিত বার্তা পোস্ট করা হয়েছিলো। এই পোস্ট ছিল ‘সমন্বিত সাইবার আক্রমণের ফল’, যা ভারতের ডিজিটাল যুদ্ধাস্ত্রের একটি পরিচিত কৌশল।
টিআরএফের অভিযোগ, ভারতীয় সাইবার গোয়েন্দারা এমন মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে কাশ্মীরের রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে দৃষ্টি সরাতে চায়। সংগঠনটির মতে, এমন কৌশল নতুন নয়। অতীতেও ভারতের পক্ষ থেকে কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে।
২০১৯ সালে আত্মপ্রকাশকারী টিআরএফ নিজেকে কাশ্মীরের ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশ’ হিসেবে দাবি করে আসছে। সংগঠনটি সাধারণত টেলিগ্রাম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের বক্তব্য প্রচার করে। যদিও অনেক বিশ্লেষক সংগঠনটির পেছনে পাকিস্তানের লস্কর-ই-তইয়েবার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে করেন, তবে টিআরএফ নিজেদের পরিচয়ে ধর্মীয় ভাষা পরিহার করে ‘প্রতিরোধ’-ভিত্তিক ভাষা ব্যবহার করে।
টিআরএফ কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত। তারা মাঝেমধ্যেই ছোট আকারের হামলা ও টার্গেট কিলিংয়ের দায় স্বীকার করে থাকে। তবে সংগঠনটির দাবি, তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য কাশ্মীরকে ভারতের অধীন থেকে মুক্ত করা।
২০২৩ সালে ভারত সরকার টিআরএফ-কে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে।
এদিকে কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা পর্যটকদের হত্যার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ভারত। সেসব ব্যবস্থার অন্যতম হচ্ছে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা। শনিবার পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা মানুষদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে পাঞ্জাবের অমৃতসরের আটারি-ওয়াঘা স্থলপথ দিয়ে মোট ১৯১ জন পাকিস্তানি নাগরিক দেশে ফিরে গেছেন। এ নিয়ে ঘটনার পর থেকে মোট ২৮৭ পাকিস্তানি দেশে ফিরে গেছেন।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অনেক বিশ্বনেতা ভারতের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। মোদিকে ফোন করে নিন্দা ও সমবেদনা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।