গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি দখলে না নেয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির কোনো স্থায়ী চুক্তিতে তিনি রাজি নন বলেও জানিয়েছেন তিনি। ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি। আহত আরও আড়াই শতাধিক।
এদিকে, পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকারী বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে ইসরাইলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক নিন্দা বাড়ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই আবারো গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরাইল। এতে সেখানে প্রতিদিনই শত শত মানুষ হতাহত হচ্ছেন। বুধবারও গাজার খান ইউনিস, জাবালিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থল ও আকাশ পথে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। এতে একদিনে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে আরও তিন শতাধিক মানুষ হতাহত হন।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অসংখ্য মানুষ আহত হয়ে ভুগছেন বিনা চিকিৎসায়। ইসরাইলের ১১ সপ্তাহের টানা অবরোধের পর এখনো কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম পায়নি হাসপাতালগুলো। এমনকি প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, ব্যান্ডেজসহ কোন চিকিৎসা সামগ্রী নেই উপত্যকাটির হাসপাতালগুলোতেও।
খাবার আর পানির জন্য চরম হাহাকার গাজা উপত্যকায়। ইসরাইল আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে গত সোম ও মঙ্গলবার ১০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেলেও সেই ত্রাণও এখনো বিতরণ করা হয়নি যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির মানুষের কাছে। এখনো অনাহারেই আছে ফিলিস্তিনিরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাবারের আশায় খালি পাত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছে শিশু আর বৃদ্ধরাও।
এমন পরিস্থিতিতেও গাজা উপত্যকাটি পুরোপুরি দখল না করা পর্যন্ত হামলা থামানো হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। গাজায় এখন পর্যন্ত আমরা দশ হাজারের বেশি সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি আমরা। গাজায় ২০ জন জীবিত জিম্মি আছে আমাদের। তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য হয়তো একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হতে পারে। কিন্তু গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ আমরা না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।
এদিকে, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে ইসরাইলি বাহিনী গুলি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরব ও এশীয় দেশগুলোর ২০ কূটনীতিক পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলির মুখে পড়েন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কূটনীতিকরা পূর্বনির্ধারিত রুট থেকে সরে গিয়ে একটি ‘নিষিদ্ধ এলাকায়’ প্রবেশ করেছিলেন, যার জেরেই তাদের সতর্ক করতে গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।