কয়লা বোঝাই এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর উদ্ধারের ঘটনায় আর্মড গার্ড না থাকাকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি জানান, জলদস্যুদের কাছে খবর ছিলো জাহাজে কোনো আর্মড গার্ড নেই। সেই সুযোগেই তারা জাহাজটি আটক করে। ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই জাহাজে আর্মড গার্ড ছিলো।
যদি এখনো আর্মড গার্ড থাকতো তাহলে হয়তো জলদস্যুরা এমন দুঃসাহস দেখাতো না বলেও উল্লেখ করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের জাহাজ মুক্ত হয়েছে। নাবিকরা মুক্ত। এটি দুবাই পৌঁছবে ১৯ এপ্রিল। মালিকরা খুব ভালো ভূমিকা রেখেছে। তারা নতুন নাবিক দল রেডি করছে। মুক্তিপণের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। জলদস্যুদের ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিলো। তাদের দুই নটিক্যাল মাইল দূরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্ধারকারী জাহাজ ছিলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বহুমাত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে নাবিকদের উদ্ধার করা হয়েছে। চাপের কারণেই দস্যুরা বাধ্য হয়েছে ছাড়তে। আর কিছুদিন গেলে কি পরিণতি হতো, তারা সেটা বুঝতে পেরেছে বলেই ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে সদরঘাটে ঈদের দিন পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনায় তদন্ত চলছে উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ওই জাহাজের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। জিরো টলারেন্স থাকবে, যারা দোষ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সমুদ্রপথকে নিরাপদ করতে আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থার (আইএমও) প্রতি বাংলাদেশ আহ্বান জানাবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সি ক্যাটাগরির দেশ হিসেবে এই প্রস্তাব দিতে পারে বাংলাদেশ।
গত ১২ মার্চ কয়লা বোঝাই এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। এ সময় জাহাজটিতে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে তারা। নাবিকদের উদ্ধারে নানা চেষ্টা করা হয়। চলে কূটনৈতিক তৎপরতা। কিন্তু অগ্রগতি আসতে সময় লাগছিল। ঘটনার পরপরই জাহাজটি উদ্ধারে যায় ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ।
এমনকি জাহাজটির জিম্মি নাবিকদের ঈদও কাটে বন্দী দশায়। তবে তাদের ঈদের দিন ভালো খাবার দেয়া হয় বলে খবর পাওয়া গিয়েছিলো। অবশেষে বাংলা নববর্ষের দিন সুখবর আসে।
স্থানীয় সময় শনিবার রাত বারটার দিকে দস্যুরা নেমে যাওয়ার পর ২৩ ক্রুসহ জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে রওনা হয় জানিয়েছেন জাহাজটি মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম।