বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার ওরফে পিকে হালদারকে ফিরিয়ে আনতে ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এমনটাই জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। এদিন পিকে হালদারের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এদিকে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের বিরুদ্ধে আরও একটি দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় প্রথম পিকে হালদারের নাম সামনে আসে। এ সময় দুদক যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে, তাদের মধ্যে পিকে হালদার একজন। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদক পিকের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পিকে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পিকে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন।
পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পিকে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রণে নিতে ২০১৫ সালে বিভিন্ন নামে শেয়ার কেনেন পিকে।
২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ, বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা 'এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট' (ইডি)। এছাড়াও রাজ্যটির বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পিকে হালদারের আরও পাঁচ সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
একই বছরের ২১ মে 'অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২' (PMLA)-এ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই আদালতের তরফে দুই দফায় মোট ১৩ দিন পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্তরা।