স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত-বার্ষিকীর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও রাজধানীর ধোলাইপাড়ে স্থাপন করা হয়নি জাতির পিতার ভাস্কর্য। মৌলবাদীদের হুমকির পর ভাস্কর্যটি এখনও স্থাপন না করাকে দুঃখজনক বলছেন লেখক-বুদ্ধিজীবীরা।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত-বার্ষিকী সামনে রেখে ধোলাইরপাড়ে বসানোর সিদ্ধান্ত হয় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। ঢাকার প্রবেশ মুখে ২০২০ সালে ভাস্কর্যটি বসানোর কথা ছিলো। কিন্তু এর বিরুদ্ধে জোরে শোরে প্রচারনায় নামে ধর্মাশ্রয়ী দলগুলো।
একই সময় কুষ্টিয়ায় রাতের আধারে ভেঙে ফেলা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। তখন যে কোন মূল্যে ধোলাইপাড়ে ভাস্কর্য স্থাপনের পক্ষে রাজপথে সরব হয় আওয়ামীলীগ। কিন্তু সে ভাস্কর্যটি আর বসেনি।
দক্ষিণ দিক থেকে রাজধানী ঢাকার প্রবেশমুখ ধোলাইপড়ে স্থাপন করার কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। ২০২০ সালে কট্টর ইসলামপন্থীরা ভাস্কর্যটিকে মূর্তি বলে আখ্যা দিয়ে সেটি স্থাপনে বাধা দেয়। এখনপর্যন্ত সেখানে স্থাপন করা হয়নি ভাস্কর্যটি। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি।
লেখক ও গবেষক অধ্যাপক মুনতাসির মামুনের মতে, যখন থেকে সরকারের সাথে হেফাজতে ইসলামের সমঝোতা হয়েছে তখন থেকেই মৌলবাদের প্রশ্নে পিছু হটার নীতিলক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন- আমি যদি প্রশ্ন করি, দুইটি বছর চলে গেল, এখনো কেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি স্থানপন করা হলো না, যেই ভাস্কর্য এতো টাকা খরচ করে তৈরি করে আনা হয়েছে ?
মুনতাসির মামুন জানান, ইসলামের নামে কেউ চিৎকার করলেই যে নতজানু নীতি দেখা যাচ্ছে, এমনটি পাকিস্তান আমলেও নজিরবিহীন ছিল। মৌলবাদের প্রশ্নে সরকারের কাছে আমরা কোনো ধরনের নমনীয়তা আশা করি না।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, উন্নয়নের ফলে অর্থনৈতিক জিডিপি বাড়ছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই- সেটা বাড়বেই। সেটা শেখ হাসিনা সরকারের কৃতিত্ব। কিন্তু সাংস্কৃতিক জিডিপি বাড়ানোর জন্য যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যকর হবে না।
যদিও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর করিব নানক বলছেন, কারও দাবির মুখে সরকার পিছুহটেনি। সব প্রক্রিয়া শেষ করে যথাস্থানেই বসানো হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি।
তিনি বলনে, ভাস্কর্য নিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল- তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। জাতির জনকের ভাস্কর্য স্থাপনের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব মন্ত্রণালয় আছে- তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
কৌশলে পরিবর্তন আনলেও তার দল প্রগতিশীলতার নীতিতে অটল থাকবে জানিয়ে এই নেতা বলেন, আদর্শের বাহিরে এক চুলও যায়নি আওয়ামী লীগ, এবং যাবেনা।
একাত্তর/এসএ