পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হাতে গ্রেপ্তার ছয় তরুণ উগ্রবাদের দীক্ষা নিয়ে ঘর ছেড়েছিল। এমনকি তারা জঙ্গিগোষ্ঠী ‘আল কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে’ কক্সবাজারের টেকনাফে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরিকল্পনাও করছিল। তাদের পরিকল্পনায় ছিল দেশে সশস্ত্র জিহাদেরও।
সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে রোববার (১ জানুয়ারি) তাদের রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- সৌদি প্রবাসী দল নেতা আব্দুর রব (২৮), মো. সাকিব (২৩), শামীম হোসেন (১৮), নাদিম শেখ (১৯), মো. আবছার (২০) ও সাইদ উদ্দিন (১৮)।
আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার তরুণরা অনলাইন থেকে আল কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র ‘জিহাদ’ করার পরিকল্পনা করছিল।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, অনলাইন মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন আব্দুর রব। পরে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি না গিয়ে চলে যান জঙ্গি ক্যাম্পে।
আব্দুর রব সমন্বয়ক হয়ে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ, প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো।
তাদের সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, যারা হিজরতে রাজি, তারা প্রথমে টেকনাফে গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং নেবেন। পরে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে যার যার মতো করে টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় দল থেকে। ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যান এবং স্থানীয় সহযোগী ও গ্রেপ্তার আবছার তাদের টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় সময়মত আসতে না পারায় টেকনাফে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন অন্যরা। গত ২২ নভেম্বর আব্দুর রব সৌদি আরব থেকে দেশে এলে শামীম তাকে বিমানবন্দর থেকে একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। দুদিন পর তারা দুজন সাকিবদের সঙ্গে মিলিত হন এবং অন্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: এলপিজির দাম কমলো, সন্ধ্যা থেকে কার্যকর
সিটিটিসি প্রধান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করে। পরে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিল। এই গ্রুপটি আল কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্র জিহাদ করার পরিকল্পনা নিয়েই সংঘটিত হচ্ছিলো।
গ্রেপ্তার ছয়জনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে এবং আল কায়দার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলেও জানান আসাদুজ্জামান।
একাত্তর/এসি