ঢাকা ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে উপেক্ষিত মধ্যবিত্ত: দেবপ্রিয়

জাহেদুল ইসলাম, একাত্তর
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২২ ২০:৫৫:০৪
প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে উপেক্ষিত মধ্যবিত্ত: দেবপ্রিয়

বাজেট লুটেরা এবং ধনীদের পক্ষে ছিনতাই হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহবায়ক ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো বলেছেন, এবারের বাজেটে সবচেয়ে উপেক্ষিত মধ্যবিত্ত। তারা এখন ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার।

তিনি আরও জানান, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যও এতে কিছুই নেই। ৫০০ টাকার ভাতায় একটা পরিবার বা দুস্থ মানুষের কিছুই হয় না।

রোববার, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২০২৩: পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কী আছে?’ -শিরোনামে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা জানান। 

আলোচনার শুরুতে ড. দেবপ্রিয় বলেন বাজেটে যে ছয়টি চ্যালেঞ্জ শনাক্ত হয়েছে সেগুলোতে কোন দ্বিমত নেই। দ্বিমতের আছে সেসবের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে।

তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত এখন ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার। এগুলো হলো- বৈষম্যমূলক অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূলের দাম বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

এই ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার মধ্যবিত্তের সুরক্ষায় প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু নাই। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণি এই মুহূর্তে রাজনৈতিকভাবে প্রতিনিধিত্বহীন। 

অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবেও মধ্যবিত্তের অভিভাবক নেই। আর প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটেও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, বাজেটে ভর্তুকি পরিমাণ বাড়ানো হলেও এর এক বড় অংশ বিদ্যুৎ খাতে চলে যাওয়ায় দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা তেমন সুবিধা পাবেন না। 

তিনি বলেন, গত এক দশকে গড়ে উঠা মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে অবহেলা করা হয়েছে। 

উপরন্তু মধ্যবিত্তরা কর ফাঁকি দেয় বলে অর্থমন্ত্রী অভিহিত করেছেন। অথচ এই শ্রেণির মানুষের মেধা ও যোগ্যতাকে কতটা ব্যবহার করা হচ্ছে, তার আলোচনা এই বাজেটে নেই।

মধ্যবিত্তরা যে সমস্ত জিনিস ব্যবহার করে যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, পানি বিশুদ্ধিকরণ যন্ত্র ও রেফ্রিজারেটর- সেগুলোর কর বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দেবপ্রিয় বলেন, সামাজিক নিরাপত্তায় টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও জিডিপি ও বাজেটের আকারের তুলনায় কমেছে। 

সরকারি কর্মকর্তাদের পেনশনের বরাদ্দ বাদ দিলে সামাজিক নিরাপত্তায় প্রকৃত বরাদ্দ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতেই রেনুকে খুঁজে পাবার চেষ্টা করেন স্বজনরা

তিনি বলেন, ৫০০ টাকার ভাতায় একটা পরিবার বা দুস্থ মানুষের কিছুই হয় না। আমরা প্রতিটি সুবিধাভোগীর জন্য ১০০০ টাকা ভাতার প্রস্তাব করেছিলাম। সেটা করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক সুরক্ষায় সুদ, পেনশন, প্রকল্প সহায়তাসহ এমন অনেক উপাদান আছে যেগুলোর সামাজিক নিরাপত্তায় ব্যয় দেখানো সঙ্গত নয়।

আলোচনায় সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেট হয়েছে ধনীবান্ধব।


একাত্তর/এসি

মন্তব্য

এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.

আপনার মন্তব্য লিখুন

Nagad Ads