পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বিশ্বের পরাশক্তির নজর এখন বাংলাদেশের ওপর। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ সকলেই এখন যে কোনো উপায়ে বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়।
শনিবার রাজধানীর বনানীতে এডিটরস গিল্ড আয়োজিত ‘কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতি-ভূরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। অর্থনৈতিকখাতে আরও বেশি স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রয়োজন বলেও মত দেন তারা।
সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয় -এই পররাষ্ট্রনীতির সফল বাস্তবায়নের রূপই হচ্ছে ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশের এখনকার অবস্থান। যেখানে উন্নয়ন সহযোগী হয়ে সকলেই রয়েছে বাংলাদেশের পাশে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আছে। একদিকে যেমন চীনের সাথে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপ্তি বেড়েছে, গভীরতা বেড়েছে, তেমনি ভারতের সাথেও বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও আমাদের সম্পর্ক কিছুদিক থেকে বেড়েছে।
ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, যারা বাংলাদেশে মতো তাদের আরও অন্তত পাঁচটা শক্র ভাবাপন্ন দেশ রয়েছে। বাংলাদেশের তেমন কোনো শত্রু নেই। মায়ানমারের সাথেও আমরা আমদানি-রপ্তানি করছি। কূটনীতির একটি অবিশ্বাস্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।
তবে জনগণ জানতে চায় কোন পথে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এবিষয়ে স্বচ্ছতা না এলে জনগণ আস্থা হারাতে পারে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, পড়ার সময় ধুম করে পড়ে যায় কিন্তু ওঠার জন্য সময় লাগে। আমাদেরও সেভাবে ধীরে ধীরে উঠতে হবে, যাতে দম ফুরিয়ে না যায়। আমাদের স্লো ও স্টিডি পোগ্রেসে যেতে হবে। আগে ফাউন্ডেশন ঠিক করে নিতে হবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ মনে করেন, সব কিছু নির্ভর করবে সুশাসনের ওপর।
মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী, খুশী কবির দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পক্ষে।
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর কোন ভাবেই হঠাৎ নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদের চেষ্টা ছিলো বাংলাদেশের ওপর, যা সফলতা পায়নি বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক এবং গোলটেবিল আলোচনার সঞ্চালক মোজাম্মেল বাবু সবশেষ যোগ করেন, ভারতের সাথে আমাদের নিরাপত্তা বিনিময়, চীনের সাথে বাণিজ্য, ইউরোপের সাথেও বাণিজ্য করছি আমরা। যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও আমাদের যুক্ততা আছে।
এবারের ডোনাল্ড লু’র সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিজয় হয়েছে।