লক্ষ্মীপুরে সানিম হোসাইন নামে ১২ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে এর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। পরিবার ও স্থানীয়রা তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত আসামি গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (১ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টা ব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সানিমের স্বজন, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, সানিম আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা অভিযোগ করেন, ঘটনার ১৭ দিন পার হলেও মামলার প্রধান আসামি আল-মুঈন ইসলামি একাডেমির মাদ্রাসা সুপার মাওলানা বশির উদ্দিনকে এখনও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তাদের আশঙ্কা, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও হস্তক্ষেপের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ১৩ মে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের তেমুহনী এলাকার আল-মুঈন ইসলামি একাডেমি থেকে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম (১২) হোসাইনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সে রায়পুর উপজেলার কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে।
ওই দিন প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, দুপুরের খাবার শেষে টয়লেটে গিয়ে সানিম আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পরিবারের দাবি, মরদেহ তারা টয়লেটে নয়, নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পেয়েছেন। তার শরীরজুড়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন।
তাদের অভিযোগ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সকালে তাকে মারধর করেন এবং আগেও নানা কারণে হুমকি দিতেন।
এদিকে ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, মরদেহের গলায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।