করোনা মাহামারী! গোটা বিশ্বকে টালমাটাল করে দেয়া এই মহামারী কি মানুষ ভুলতে বসেছে? কোথাও কোন বিধি-নিষেধের বালাই নেই। মানুষের মুখে মাস্ক এখন দেখাই যায় না। যদিও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেনি, ভয়াল এই মহামারীকাল থেকে বেরিয়ে এসেছে পৃথিবী। উল্টো সতর্কবার্তা দিয়েই যাচ্ছে, বলছে মাস্কের প্রয়োজন এখনও ফুরিয়ে যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে।
এখনও প্রতিদিনি বিশ্বের কমবেশি সব দেশেই কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিড-১৯ ভাইরাসে। টিকার কল্যাণে ভাইরাসটি আগের মতো যুদ্ধাংদেহী না হলেও, দুর্বল প্রতিরোধ শক্তির মানুষকে ঘায়েল করছে। বহু দেশ থেকে খবর আসছে নিত্য নতুন ভ্যারিয়েন্টের। এইতো, দুদিন আগেই ভারত জানালো, তাদের জেএন-১ নামে একটি নতুন ধরন পাওয়া গেছে। এই ধরনটির সংক্রামক ক্ষমতা নাকি বেশ জোরালো।
বাংলাদেশসহ এখনও বহু দেশে চলছে করোনা প্রতিরোধী টিকার তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ দেয়ার পালা। এই ভাইরাসকে বধ করার টিকা আবিস্কারের পর গোটা বিশ্ব লকডাউন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসলেও, এর সাইড ইফেক্ট বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে চলছে গবেষণা। সব ওষুধের মতোই করোনা টিকারও কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর এনিয়ে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বহু দেশ।
এমনই এক গবেষণার ফলাফল সামনে এসেছে। তাতে বলা হচ্ছে করোনা টিকা নেয়া মানুষের মধ্যে পেশি ও স্নায়ুজনিত নানা সমস্যা হতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানী এমআরএনএ ভ্যাকসিনের নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়ে দাবি করেছেন, টিকা যারা নেননি তাদের থেকে যারা টিকা নিয়েছেন তাদের প্রদাহজনিত নানা রোগের ঝুঁকি বেড়েছে। এমনকী হার্টের রোগের ঝুঁকিও বেড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার তিনটি ইউনিভার্সিটি এনিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল। ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, জনসন, নোভাভ্যাক্সের ভ্য়াকসিন নিয়ে গবেষণা করছিলেন তারা। এসব টিকা যারা নিয়েছেন তাদের পরবর্তী সময়ে কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, সে নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, চোখের রোগ, পেশির প্রদাহজনিত রোগ, স্নায়ুর রোগ, অ্যানিমিয়া, ত্বকে, কান ও দাঁতের রোগ বেড়েছে টিকা নেয়ার কারণে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা, হার্টের অসুখ বেড়েছে। এসবই দেখা গেছে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে। তবে আরেক দল বিজ্ঞানীর দাবি, করোনার টিকা নয় বরং জীবনযাপনে একাধিক অনিয়ম, দেদার মদ্যপান, খাদ্য়াভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব ইত্যাদি নানা কারণে এত অসুখবিসুখ বেড়েছে। করোনা প্রভাব আগের মতো না থাকায় মানুষজনও আগের চেয়ে অনেক বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।