স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন জানিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট কালিনাক বলেছেন, ফিকোর পরিস্থিতি এখন সত্যিই জটিল। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
বুধবার রাতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ফিকোর বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এই মুহূর্তে আমরা সবাই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত।
আজ যা ঘটেছে তা একটি কলঙ্ক, যা আমাদের আগামী বহু বছর ধরে তাড়িত করবে বলেও মন্তব্য করেন কালিনাক।
এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে একটি সরকারি বৈঠকে অংশগ্রহণের পর সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানস্কা বাইস্ট্রিকা শহরের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বার্তা সংস্থা টিএএসআর'র বরাতে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এদিন স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিস্লাভার উত্তর-পূর্বের শহর হ্যান্ডলোভায় তার পেট লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।
এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতুস সুতাজ এস্টক বলেছেন, বন্দুকধারী ফিকোকে লক্ষ্য করে পাঁচটি গুলি করেছে।
বিবিসি বলছে, হ্যান্ডলোভায় একটি কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে বেশ কিছু মানুষ হামলাকারীকে আটক করতে পিছে ছুটছে। তবে এ ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।
স্লোভাক পার্লামেন্ট ফিকোর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করলেও ঠিক কী কারণে এ হামলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট জানায়নি।
ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত হামলাকারীকে আটক করা হলেও তার পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
দেশটির প্রেসিডেন্ট জুজানা কাপুতোবা এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ফিকোর সুস্থতা কামনা করেছেন।
স্লোভাকিয়ার মাটিতে সহিংসতার কোনো স্থান নেই বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়াপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ফিকো গেলো সেপ্টেম্বরে নির্বাচন জিতে আবার ক্ষমতায় ফেরেন। এর আগে তিনি দুই দফায় স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
নির্বাচনের আগে ৫৯ বছর বয়সী ফিকো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি ক্ষমতায় আসলে ইউক্রেনে আর "এক রাউন্ড গোলাবারুদও" পাঠাবেন না এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবেন।
এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নানা রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ান ফিকো। বিশেষ করে, গেলো জানুয়ারিতে তিনি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ন্যাটো সামরিক জোটের দেশগুলোর সাথে তার সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
এ হামলার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ থাকতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।