মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৯০ মিনিটের এ বিতর্কের জেরে এখনও গরম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। দুই প্রার্থীকে নিয়েই উঠছে নানা প্রশ্ন। তবে এ নিয়ে সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছেন মার্কিন টেলিভিশন সিএনএন এর দুই সাংবাদিক।
সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে বাইডেন ও ট্রাম্পের মুখোমুখি বিতর্ক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সিএনএন এর দুই শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক জ্যাক ট্যাপার ও ডানা বাশ। বিতর্কের সময় ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকরণের নিয়ম না মানায় তোপের মুখে পড়েছেন তারা।
অন্যদিকে বিতর্ক চলাকালীন এই দুই সাংবাদিক কোনো প্রার্থীকেই তাদের বরাদ্দ সময়ের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি এবং সরাসরি কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। একইসাথে সিএনএন এর গণমাধ্যম নীতি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে।
সাবেক কেবল নিউজ হোস্ট কিথ ওলবারম্যান সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ট্রাম্পের মিথ্যা কথার ফুলঝুরির সত্যতা যাচাই না করে সিএনএন সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছে। সিএনএন এ সিদ্ধান্ত ক্ষমার অযোগ্য।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের কলামিস্ট নিকোলাস ক্রিস্টফ বলেন, আমি আশা করি সিএনএন মডারেটররা আরও ফ্যাক্ট চেকিং করুক, দর্শকদের জানাতে হবে যে যেগুলো বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। একটি প্ল্যাটফর্ম কীভাবে সত্যের আড়ালে মিথ্যাকে তুলে ধরেসে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।
সিএনএন এই দুই সাংবাদিকের পক্ষ নিয়ে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা জ্যাক এবং ডানার জন্য খুব গর্বিত। আমাদের কাজ ছিলো প্রার্থীদের কথা শোনার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাতে ভোটাররা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং আমরা তা করতে পেরে আনন্দিত।
যদিও বিতর্কের আগে সিএনএন বলেছিল, জ্যাক এবং ডানা সময় এবং ফ্যাক্ট চেকিং এর বিষয়গুলো নিশ্চিত করবেন।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার রাতের বিতর্কে ট্রাম্পের আক্রমণে বাইডেনের লেজেগোবরে অবস্থা হলেও ট্রাম্প বাইডেনের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ এনেছেন যার কোনো ভিত্তি নেই। একই অভিযোগ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনেরও।
তবে বাইডেনও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়ে আক্রমণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে ট্রাম্প শিবির।
এদিন ট্রাম্প বাইডেনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে অনিরাপদ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের সুনাম নষ্ট করেছেন। ইরানে বাইডেন নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি যা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। রিপাবলিকান এই প্রার্থী বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন এবং চীনের শি জিনপিংয়ের মতো বিদেশি স্বৈরচারীরা বাইডেনকে কোনো সম্মানও করে না বা ভয়ও পায় না।
জবাবে বাইডেন বলেন, ট্রাম্প বিস্তর অপরাধ করেছেন। ডেমোক্রেট এই নেতা বলেন, ট্রাম্প এক পর্নো তারকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন, অথচ তখন ঘরে তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। এছাড়া বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প সামাজিক নিরাপত্তা ও মেডিকেয়ার সুবিধা কমাতে চান।
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে এই দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আরও একবার মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেবেন।