বিদ্রোহীদের লাগাতার হামলা এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। টানা কয়েকদিনের সহিংসতার জেরে রাজ্যের তিন জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। নতুন করে জাতিগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
মঙ্গলবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী পাঁচদিন রাজ্যজুড়ে বন্ধ থাকবে সমস্ত ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডেটা পরিষেবা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাজ্যে অসামাজিক উপাদান, ছবি, ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং ঘৃণামূলক ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যা জনগণের আবেগকে উস্কে দিচ্ছে।
এদিকে সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে রাজ্যটিতে সহিংসতা বাড়তে থাকায় ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং থৌবল জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবা কারফিউয়ের আওতার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইম্ফলে মণিপুর রাজ্যের গভর্নরের কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিলো ছাত্র-জনতার। স্থানীয় সময় দুপুর একটার দিকে মিছিল গভর্নর হাউসের কাছাকাছি পৌঁছালে সেখানে মোতায়েন থাকা পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
প্রায় এক ঘণ্টার সংঘর্ষ শেষে দুপুর ২টার দিকে ছাত্র-জনতাকে পুরোপুরি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। তার কিছুক্ষণ পরই ইন্টারনেট বন্ধের ঘোষণা দেয় মণিপুর রাজ্য সরকার।
গত কয়েক দিনে বিদ্রোহীদের সাথে দফায় দফায় গুলিবিনিময় হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। বোমা বিস্ফোরণের পাশাপাশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে একাধিক অঞ্চলে। এসব ঘটনায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
এর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি সম্প্রদায়ের সংঘাত শুরু হয়। এই সাম্প্রদায়িক সংঘাতে এ যাবত অন্তত দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া এ সহিংসতায় গেলো ১০ দিনে আরও ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।