দক্ষিণ কোরিয়ার বেসরকারি বিমান সংস্থা জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটিতে পাখি আঘাত করেছে, কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে এমন সতর্কতা পেয়ে বিধ্বস্তের মাত্র এক মিনিট আগেই পাইলট ‘মেডে’ কল করেছিলেন। কোনো উড়োজাহাজে যাত্রীদের প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হলে, পাইলটরা সাধারণত কন্ট্রোল টাওয়ারে এই ধরনের কল করে জরুরি অবতরণের অনুমতি চান।
দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, এর এক মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণের দুর্ভাগ্যজনক চেষ্টা করে। ফ্লাইটটি কোনো পাখিকে আঘাত করেছিলো কি না, সেটি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি কর্মকর্তারা। তবে উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডারটি সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে ককপিট ভয়েস রেকর্ডারটিও পাওয়া যায়। কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা জেজু এয়ার ফ্লাইটটির বিধ্বস্তের কারণ অনুসন্ধান করছেন। সম্ভাব্য পাখির আঘাতের বিষয়টিও তারা তদন্ত করে দেখছেন। তবে জরুরি অবতরণের সময় সেখানে জরুরি সহায়তাকারীরা কেন উপস্থিত ছিলেন না এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭সি২২১৬ উড়োজাহাজটিতে পাখি আঘাত করেছে বলে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে সতর্কতা জারি করার পরপরই পাইলটরা ‘মেডে’ ঘোষণা করেন। এর এক মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণের দুর্ভাগ্যজনক চেষ্টা করে।
মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া উড়োজাহাজে দুই থাই নাগরিকসহ ১৭৫ জন যাত্রী ও ছয়জন ক্রু ছিলেন। স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে উড়োজাহাজটি অবতরণের সময় রানওয়েতে ছিটকে পরে একটি প্রাচীরে আঘাত করে। এতে সঙ্গে সঙ্গে উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। উড়োজাহাজের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে উড়োজাহাজটিতে একটি পাখি আঘাত করেছে বলে সতর্কতা জারির প্রায় তিন মিনিটের মধ্যে আবারও অবতরণের চেষ্টা করে। বিধ্বস্তের এক মিনিট আগে উড়োজাহাজের পাইলটরা ‘মেডে’ কল করেন।
বিমানবন্দরের রানওয়ে অত্যন্ত ছোট হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উড়োজাহাজটি টারমাক থেকে নেমে আসছে এবং একটি দেয়ালে আঘাত করছে। যে কারণে রানওয়ে ছোট হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেনি বলে মনে করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরের রানওয়ে অত্যন্ত ছোট হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উড়োজাহাজটি টারমাক থেকে নেমে আসছে এবং একটি দেয়ালে আঘাত করছে। যে কারণে রানওয়ে ছোট হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেনি বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে প্রায় দুই হাজার ৮০০ মিটার দীর্ঘ। দুর্ঘটনার কবলে পড়া উড়োজাহাজের আকারের মতো একই ধরনের উড়োজাহাজ সেখানে অবতরণ করেছে। সেসব উড়োজাহাজে কোনো ধরনের সমস্যা হয় না।
মুয়ান ফায়ার স্টেশনের প্রধান কর্মকর্তা লি জিয়ং-হিউন বলেছেন, বৈরী আবহাওয়ার পাশাপাশি একটি পাখির আঘাতের কারণে উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে যৌথ তদন্ত শেষে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের সঠিক কারণ ঘোষণা করা হবে।