ষষ্ঠ দিনের মতো হামলা পাল্টা হামলায় উত্তাল ইরান-ইসরাইল। একই সাথে, প্রতিপক্ষের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করেছে দুই দেশই। পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরাইলি হামলায় যোগ দেয়ার কথা বিবেচনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে পাল্টাপাল্টি হামলার মাঝেই ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর, ট্রাম্পের এই বার্তার পরপরই যুদ্ধ শুরু হলো বলে ঘোষণা দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। প্রথমবারের মতো হাইপারসনিক মিসাইল ছুঁড়েছে ইরান।
ইরান-ইসরাইল সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকেই ইসরাইলেই কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানায়, তারা প্রথম প্রজন্মের ফাত্তাহ হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহার করে ইসরাইলের অধিকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে।
এসব মিসাইল ইসরাইলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ঢাল ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে। আইআরজিসি জানিয়েছে, তাদের মিসাইল হামলা প্রমাণ করেছে, ইরান অধিকৃত অঞ্চলের আকাশসীমার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। ইসরাইলের সাধারণ নাগরিকরাও এখন ইরানি আক্রমণের মুখে পুরোপুরি অরক্ষিত।
এদিকে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা ৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের পরমাণু উৎপাদন কেন্দ্রসহ একাধিক অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র।
তেহরানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ইরানি সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালাতে যাচ্ছে তেল আবিব। হামলার আগে বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা নির্দেশনার ভিত্তিতে এই হামলা চালানো হয় বলে দাবি করে তারা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ইসরায়েল দেশটির পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া তেহরানের নিকটে খোজির ব্যালিস্টিক মিসাইল কেন্দ্রেও আঘাত হানা হয়।
এর মাঝেই সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে এক পোস্টে ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে ট্রাম্প এক পোস্টে বলেছিলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে যুক্তরাষ্ট্র চাইলেই হত্যা করতে পারে। তবে আপাতত তারা তা করছে না, কেবলমাত্র মার্কিন সেনা ও নাগরিকদের ওপর পাল্টা হামলার ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে, ট্রাম্পের এই হুমকির পর যুদ্ধ শুরু হলো বলে ঘোষণা দেন ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা। খামেনি বলেছেন, ইরান কখনোই আপস করবে না। ইরান ইসরাইলের আক্রমণের কঠোর প্রতিশোধ নেবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাতের কারণে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত জেরুজালেমে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বন্ধ থাকবে।