সেকশন

রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
 

মূল্যস্ফীতি নেমে যাবে ৬.৭৫ শতাংশে: অর্থমন্ত্রী

আপডেট : ২৯ জুন ২০২৪, ০৮:১০ পিএম

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫ শতাংশে এবং মধ্যমেয়াদে ৭.২৫ শতাংশে নেমে যাবে।

শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট আমরা এমন এক সময়ে প্রণয়ন করছি যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকটসহ নানা বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও মূল্যস্ফীতি-সহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তাই এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনাকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। 

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে ইতোমধ্যে সংকোচনমূলক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে; নীতি সুদহার (রেপো) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে ৮.৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে এবং ব্যাংক সুদের হার সম্পূর্ণরূপে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তাছাড়া রপ্তানি উৎসাহিতকরণ এবং প্রবাস আয়ে গতি সঞ্চারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডলারের বিনিময় হারের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। মুদ্রানীতির সংকোচনমূলক উদ্যোগের সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করেছি, যেমন বাজেট ঘাটতি হ্রাসকরণ, কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় নিরুৎসাহিতকরণ এবং বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছতাসাধনের উদ্যোগ। আমাদের গৃহীত এসব নীতি-কৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে দীর্ঘমেয়াদে এ পন্থা অবলম্বন করা হলে প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। অথচ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের প্রয়োজন ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি। এ অবস্থায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা– এ দুটি আপাত বিপরীতমুখী লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে আমরা এবারের বাজেট প্রণয়ন করেছি। আমরা দৃঢ়ভাবে আশা রাখি যে প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে শিগগিরই উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পারব।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতোমধ্যে আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের সব যোগ্যতা অর্জন করেছি এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের একটি টেকসই ভিত্তি অর্জন করেছি। গত দেড় দশকে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৭ শতাংশেরও বেশি; জিডিপির মানদণ্ডে ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতি। এই ভিত্তির ওপর ভর করে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার সাজিয়েছে। 

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা মোট ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছি। এবারের বাজেটে সম্পদ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত অগ্রাধিকারগুলো অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসাহিতকরণ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ইত্যাদি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রেখেছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট বরাদ্দ বৃদ্ধির হার ১১.৬ শতাংশ হলেও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতে বাড়ানো হয়েছে ৩৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর আমরা যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো দেশে শিল্পায়ন ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যে কাঙ্ক্ষিত অনুকূল ও সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। আমরা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া ব্যবসা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে আগামী ২০২৪-২৫ থেকে ২০২৬-২৭ পর্যন্ত সময়ে ১১০টি সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সহায়ক অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পদ সঞ্চালনের পরিকল্পনা করেছি। এসব উদ্যোগের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগামী অর্থবছরে ৬.৭৫ শতাংশে এবং মধ্যমেয়াদে ৭.২৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা রাখছি।

এআর
বাড়িয়ে বা কমিয়ে নয়, এখন থেকে মূল্যস্ফীতি ও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রকৃত তথ্য প্রকাশ পাবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়। সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রথম বাজেট উপস্থাপিত হয় ১৯৭২ সালের ৩০ জুন। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের জন্য দেশের প্রথম বাজেট পেশ করেন...
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ঢাকায় সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যানা বেজার্ড।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রাথমিক লক্ষণে তার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। কিছুদিন পরে পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া...
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতাকে সিলেটে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাদারীপুরে ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে আয়শা আক্তার (২২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যেন ফিরে না আসে সে জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বাংলাদেশে নিট বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তঃকোম্পানি ঋণ এবং শক্তিশালী ইক্যুইটি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
লোডিং...
সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর


© ২০২৫ প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত