বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্রের শেষদিনকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। এ দিনে শুরু হয় হিসাবের ‘হালখাতা’ হালনাগাদের কাজ। শুরু নতুন বছরের হিসাব-নিকাশের পালা। আবহমান বাংলায় চিরায়ত ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে দিনটি।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বছরের শেষদিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন।
মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। এদিনটিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
এছাড়া চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
অবশ্য ডিজিটাল যুগে অনেকটাই ভাটা পড়েছে ঐতিহ্যের হালখাতায়। চারপাশে প্রযুক্তির ছোঁয়া, কম্পিউটার, ল্যাপটপ আর অ্যাপসের দুনিয়ায় হাতে লেখা খাতার প্রচলন প্রায় উঠে যেতে বসেছে। ফলে এখন আর বাংলা সনের প্রথম দিনে ব্যবসায়ীদের নতুন হালখাতা খুলতে খুব একটা দেখা যায় না।
তবে ঐতিহ্য রক্ষায় এখনো রাজধানীর অনেক ব্যবসায়ী রীতি ধরে রাখতে হালখাতা উৎসব করে থাকেন। এই হালখাতার উৎসব হয় মূলত, বৈশাখ মাসের প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে। এদিন ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে পুরনো বছরের লেনদেন চুকিয়ে, নতুন বছরে খোলা হয় হিসাবের নতুন খাতা। শুরু হয় হালখাতার হালনাগাদ।