কমে গেছে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বিক্রি। তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে বিক্রি এখন অস্বাভাবিক স্তরে নেমেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমায় তারা অতি প্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্য ও সেবার জন্য ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিগত প্রায় এক দশকে ঈদের মতো উৎসবে মানুষের মধ্যে নতুন ফিচারের স্মার্ট ফোন কেনার হিড়িক ছিলো। কিন্তু গত তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মোবাইল ফোন কেনা কমিয়ে দিয়েছে। এ তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসির।
টেলিকমখাত বিশ্লেষকরা বলছেন, মাসের বাজার জোগাড় করতে গিয়েই এখন মানুষের হাতে টাকা থাকছে না। ফলে নতুন মুঠোফোন কেনা তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন।
টেলিকম খাত বিশ্লেষক টিআইএম নুরুল কবীর একাত্তরকে বলেন, তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য একটা প্রণোদনা দেওয়া উচিত। যাতে দেশের মানুষের হাতে আরও স্বল্প দামে মোবাইল ফোন পৌঁছাতে পারে।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স এসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, দেশে মোবাইল ফোনের বাজার প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার। বাংলাদেশেই গড়ে ওঠা ১৭টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চাহিদার ৯৯ শতাংশ মেটানো সম্ভব হলে। বাজারে বিক্রির ৪০ শতাংশ মুঠোফোনই অবৈধ পন্থায় আনা।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দীন বলেন, ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ার কারণে এবং বিদ্যুৎ বিল বাড়ার কারণে যারা অনেক বেশি উৎপাদন করতো তারা লার্জ স্কেলে উৎপাদন করছে না। এ কারণে দামও কিছুটা বেড়েছে।
শুধু মুঠোফোন না, কমেছে মোবাইল সিমের বিক্রিও।
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, চাইনিজ সেট যেগুলো মার্কেটে আসছে সেগুলো নিম্নমানের। এতে আপনি স্পিডও পাবেন না, কোয়ালিটিও পাবেন না। সহসা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই জায়গায় আমাদের কাজ করা দরকার।
বিটিআরসি বলছে স্মার্টফোনের বিস্তার বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অবৈধবাজার নিয়ন্ত্রনে আরও জোর দেওয়া হবে।
বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ বলেন, পাঁচ হাজার টাকার নিচে কিন্তু কোনো স্মার্ট ফোন নেই। ওই সুবিধা দেওয়া দেওয়ার জন্য ফোর জি ভোল্ট এনাবেল করার জন্য বলেছি।
দেশে মোবাইলখাতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা আছে। তবুও ব্যবসায়ী ও উৎপাদকের স্বার্থে আসন্ন বাজেটে এই খাতে বিশেষ নজর দেয়ার আহবান বিটিআরসির।