মাংসের বাজার অস্থির রমজান শুরুর আগ থেকই। এরমধ্যেই কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে আলোচনায় আসেন ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেন তিনি। এতে তার দোকান ‘খলিল গোস্ত বিতানে’ ক্রেতাদের ঢল নামে।
তবে ১০ রোজা না যেতেই প্রতি কেজি মাংসের দাম ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন এই মাংস ব্যবসায়ী। খলিল জানান, প্রান্তিক পর্যায়ে গরুর দাম বাড়ায়, মাংসের দাম কেজিতে একশ’ টাকা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। তবে, রাতারাতি দাম বাড়ায়, দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা ক্ষোভ ঝাড়লেন।
কেজিতে একশ’ টাকা দাম বাড়ানোর পরও শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাংস ব্যবসায়ী খলিলের দোকানে ছিলো ক্রেতার দীর্ঘলাইন। তবে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেয়ায়, রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত এবং পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আসা ক্রেতারা বিপাকে পড়েন। অনেকেই বাধ্য হয়েই মাংস কিনছেন।
প্রতিষ্ঠানটির মালিক খলিলুর রহমান রমজানের শুরুতে ঘোষণা দিয়েছিলেন ২৫ রোজা পর্যন্ত ৫৯৫ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করবেন। কিন্তু ১০ রোজা যেতেই কেজিতে ১০০ টাকা দাম বাড়িয়েছেন। এতে ক্ষোভ ঝেড়েছেন ক্রেতারা, সেই সঙ্গে অভিযোগ এনেছেন কারসাজির।
ক্রেতাদের অভিযোগ করেছেন, এটা একটা সিন্ডিকেট। প্রথমে কম দামে বিক্রি করে লোভ দেখানো হয়, এরপরই তাদের আসল রূপ দেখা যায়। তবে এরপরও কেন মাংস কিনতে এসেছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, কিনছি এই কারণে যে, রাজধানীর কোথাও ৮০০ টাকার নিচে মাংসের কেজি নেই।
খলিলের দাবি, খামারিদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে গরুর দাম বেড়ে গেছে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেড়েছে। এ কারণেই মাংসের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো চাপের কারণে আমি দাম বাড়াইনি। মূলত গরু কেনায় বাড়তি দাম পড়ায় মাংসের দামও বাড়াতে হয়েছে।
শাহজাহানপুরে এই মাংস ব্যবসায়ী বলেন, এত দিন আমি লোকসান দিয়েই মাংস বিক্রি করেছি। যেহেতু বিক্রি অনেক বেশি, তাই লসও বেশি হচ্ছিল। আমার ইচ্ছে ছিল ২৫ রমজান পর্যন্ত মানুষকে কম দামে মাংস খাওয়ানো। সেই ইচ্ছে আর পূরণ হলো না।
তিনি আরও বলেন, ৫০০ টাকা দামে গরুর মাংস বিক্রির ইচ্ছে ছিলো জানিয়ে খলিল বলেন, সরকার যদি গরুর খাদ্যের দাম কমিয়ে দেয়, চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করে এবং ১০ দিনের জন্য যদি ভারতের সীমান্ত খুলে দেয় তাহলে ৫০০ টাকায় মাংস বিক্রি করা যেত।
একই অবস্থা মিরপুরের লালমাটিয়ায় উজ্জ্বলের দোকানে। তিনিও কেজিতে ৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৩০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করছেন। তবে এখনো ব্যতিক্রম আছেন, লালবাগের কাউন্সিলর। রোজার মাস জুড়েই ৫৮০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করে তার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সেবা দিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের উপস্থিতিতে প্রথম রমজানে কম দামে মাংস বিক্রি শুরু করেন খলিল। সম্প্রতি বিশ্ব ভোক্তা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যবসায় উত্তম চর্চার স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পুরস্কারও পান তিনি।