তীব্র গরমের সাথে যোগ হয়েছে ওয়াসার পানির সঙ্কট। দুর্বিষহ দিন পার করছেন রাজধানীর মাটিকাটা, ভাষানটেক, নদ্দাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ। সঙ্কটে পড়েছেন গুলশানের মতো অভিজাত এলাকার বাসিন্দারাও। ভুক্তভোগীদের দাবি, বছরের এই সময়ে পানির সঙ্কট প্রতি বছরের চিত্র। কিন্তু কখনও কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না।
মিরপুরের মাটিকাটা এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, তীব্র গরমে মানুষের পানির চাহিদা যখন বেড়েছে তখন এই এলাকায় পানির সরবরাহ এতোটাই কমে গেছে যে খাওয়া গোসলের মতো নিত্য প্রয়োজনও মিটছে না। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও ওয়াসা কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের উৎপাদন সক্ষমতা আগের মতো থাকলেও তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়েছে। বাড়তি চাহিদার কারণেই এই ভোগান্তি।
এই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, পানি না পেলে কিনে খেতে হয়। খরচ বাড়ে। সমস্যাও বাড়ে।
মাটিকাটার এক নারী বলেন, কলে পানি না থাকলে পাম্প থেকে পানি টেনে নিয়ে কাজ করতে হয়। এই গরমে পানি নেই। আবার পানি টানতে হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন বয়স্ক আর অসুস্থ রোগীরা। ভাষানটেক এলাকার মানুষের দাবি প্রতি বছরই এপ্রিল মে মাসে পানির সরবরাহ কমে যায়। কিন্তু ওয়াসা সেদিকে দৃষ্টি দেয় না।
এক বাসিন্দা বলেন, সকালে আগে সাতটার দিকে। আবার চলে যায়। আধঘণ্টাও থাকে না। সারাদিন পানি ছাড়া চলা যায়? মানুষের বাসা থেকে খাওয়ার পানিটুকু না হয় আনি কিন্তু এর বাইরেওতো পানি লাগে। সেটা কোথা থেকে আনবো?
তীব্র গরমে চিকিৎসকরা যখন বেশি বেশি গোসলের পরামর্শ দিচ্ছেন তখন পানির সঙ্কটে এসব এলাকায় অনেকে দিনে একবারও ঠিক মত গোসল করতে পারছেন না। অভিযোগ আছে ওয়াসার মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিরুদ্ধেও।
মাটিকাটার এক বাসিন্দা বলেন, ওয়াসার কিছু লোক আছে যারা রাতের আঁধারে অবৈধ সংযোগ দেয়। যাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নিতে পারে বা যারা বেশি দেয় তাদের চাবিগুলো খুলে দেয়।
পানির এমন সঙ্কটে দিন পার করছেন রাজধানীর অন্তত দশ থেকে বারোটি এলাকার মানুষ। এদের মধ্যে বাধ্য হয়ে যারা ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি কিনে প্রয়োজন মেটান তাদের অভিযোগ, সেই পানি দিতেও গড়িমসি করেন ওয়াসার কর্মীরা।
অথচ ঢাকা ওয়াসা বলছে, নগরীতে চাহিদার চেয়ে পানির উৎপাদন বেশি। বর্তমানে পানির চাহিদা দৈনিক গড়ে ২৬০ কোটি লিটার। ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ২৭০ কোটি লিটার। কোনো এলাকায় পানির সমস্যা হলে ঢাকা ওয়াসার হটলাইন নম্বর ১৬১৬২-এ যোগাযোগ করতে হবে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পানির সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেবে ওয়াসা।