ভয়াবহ বন্যায় অর্ধেক পাকিস্তান তলিয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১১৯ জন। মোট মৃত্যু দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১২৮ জনে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে দেশটির সরকার। এদিকে, আফগানিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯২ জন। খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন ১০ লাখ মানুষের।
পাকিস্তানে জুনে শুরু হয় মৌসুমি বৃষ্টিপাত। যা এখনো অব্যাহত। অকল্পনীয়, অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় খায়বার পাখতুনখাওয়া, দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় সিন্ধু, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার পাখতুনখাওয়ার কাবুল নদীর সেতু ধসে যায়। এক রাতের মধ্যে গোটা সেতু ভেসে যাওয়ায় একটা গোটা জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
ঘরবাড়ি হারায় চরসদ্দা অঞ্চলের এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ। বন্যায় এ পর্যন্ত সাত লাখ ঘরবাড়ি, তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তা, কমপক্ষে দুইশ’ ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অর্ধেক পাকিস্তান পানিতে তলিয়ে আছে। ঘরহীন, আশ্রয়হীন অন্তত ৫৭ লাখ মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে টনের পর টন শস্য, মারা গেছে অগণিত গবাদিপশু।
বেলুচিস্তানে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচল। কোয়েটা থেকে বন্ধ রয়েছে ফ্লাইট। মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি রয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরো বৃষ্টিপাত হতে পারে।
জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। ত্রিশ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে জাতিসংঘ।
দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল পরিদর্শনের পর এক টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানান, দুর্যোগের মাত্রা অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি।
এদিকে, বন্যায় বিপর্যস্ত আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোও। চলতি মাসে ১৯২ জন মারার গেছে। ধ্বংস হয়েছে ১৭ রাখ ফলগাছ। মারা গেছে লক্ষাধিক গবাদিপশু।
১০ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। চাওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক সহায়তা।
গত এক দশকের মধ্যে এমন পরিস্থিতি পাকিস্তানে তৈরি হয়নি। যার ধাক্কায় তিন কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ বিপর্যস্ত। বন্যার ধাক্কায় প্রাণ গেছে হাজারের বেশি মানুষের।
আরও পড়ুন: ডাচ বার্বিকিউ পার্টিতে ট্রাক চাপায় নিহত ছয়
৩ হাজার ১৬১ কিলোমিটার সড়ক বন্যার কবলে পড়েছে। ভেঙে গিয়েছে ১৪৯টি সেতু। প্রায় সাত লাখ বসত পুরোপুরি আ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু জায়গায় রেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
একাত্তর/আরএ