বাণিজ্যযুদ্ধের পর চীন খুব ভালোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৯০ দিনের শুল্ক স্থগিতের পদক্ষেপকে জয় হিসেবেই দেখে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। কিন্তু এ ব্যাপারে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণই আলাদা।
শুল্ক স্থগিতের এই পদক্ষেপকে একটি জাতীয় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ছাড় নিশ্চিত করেছে, জিডিপি পূর্বাভাস বাড়িয়েছে এবং চীনকে গ্লোবাল সাউথের নায়ক করে তুলেছে।
চীনজুড়ে চলছে বিজয়ের উচ্ছ্বাস। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে ৯০ দিনের জন্য সাময়িক বিরতির সিদ্ধান্তকে ‘জাতীয় সাফল্য’ হিসেবে দেখা হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে।
আমি আসলে বেশ অবাক। ভেবেছিলাম একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে, তবে এটি এত তাড়াতাড়ি ঘটবে, সেটি আশা করিনি। উভয় পক্ষই কয়েকদিন আগে এনিয়ে বৈঠক করেছে।
চীনের সংবাদ মাধ্যম সিনহুয়া বলছে, আগামীর জন্য এখন উভয় পক্ষকেই প্রজ্ঞা ও সাহস নিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে। কেউ কেউ এটিকে বড় জয় হিসেবেও দেখছে।
এরপরও চীনের জন্য উদ্বেগ রয়েছে। কারণ ট্রাম্প তার মন এখনও পরিবর্তন করতে পারেন। আবার কমিউনিস্ট পার্টি এখন সংস্কারের ব্যাপারে পিছিয়ে আসতে পারে।
বর্তমান সমঝোতা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর আরোপ করা পারস্পরিক শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে। অন্তত ৯০ দিনের জন্য।
ফেন্টানাইল বাণিজ্যে চীনের ভূমিকার জন্য পূর্বে আরোপিত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বহাল থাকবে। তবে এক্ষেত্রে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া ৮০০ ডলারের কম মূল্যের ই-কমার্স প্যাকেজের ওপর ১২০ শতাংশ শুল্ক অর্ধেক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া এসব পদক্ষেপের বিপরীতে চীন প্রস্তাব খুব বেশি নয়। দেশটি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে। চীন বোয়িং বিমানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, যা তার প্রয়োজন।
এছাড়া, বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হতে পারে। এর ফলে বাণিজ্য আংশিকভাবে পুনরুদ্ধারসহ প্রমাণ হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম নয়।
এতে করে, চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও আবারও ফিরে এসেছে। গোল্ডম্যান স্যাকস এই বছরের জন্য তাদের পূর্বাভাস ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে চার দশমিক ছয় শতাংশ করেছে। তারা আশা করছে, মোট রপ্তানি আগের মতো ৫ শতাংশ হ্রাসের পরিবর্তে স্থিতিশীল থাকবে।
চীনের ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগানও পূর্বাভাস চার দশমিক আট শতাংশ করেছে। এই উত্থানের মধ্য দিয়ে গ্লোবাল সাউথেও কূটনৈতিক প্রশংসা পেতে পারে বেইজিং, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।