কখনও চিকিৎসা বিজ্ঞানী, আবার কখনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, কিংবা কখনও গবেষক।
আরো রয়েছে কর্ণেল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, মানবাধিকারকর্মীসহ অসংখ্য পরিচয়।
এত সব পরিচয় যার ঝুলিতে, সেই প্রতারক ডা. ইশরাত রফিক ঈশিতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে, কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, সকালে ঈশিতাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তারের সময় শহিদুল ইসলাম দিদার নামের এক সহযোগিকেও গ্রেপ্তার করেন তারা।
এ যেন আরেক শাহেদ করিম। সরকারি একটি সংস্থা থেকে বহিষ্কৃত ঈশিতা কবির বিখ্যাত হবার প্রধান মাধ্যম হিসাবে বেছে নেয় মূলধারার গণমাধ্যম।
তাই নিজেকে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল, কর্ণেল, এই সব পদ ব্যবহার করে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক কিছুই বাগিয়ে নেয় বলে দাবি করেছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
শুধু তাই নয়, ঈশিতা নিজেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানী, গবেষক, বিশিষ্ট আলোচক, ডিপ্লোম্যাট বলেও পরিচয় দিতো। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেও পরিচয় দিতো।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, আটক ঈশিতা রফিকে সব পরিচয়ই ভুয়া, প্রতারণাই ছিলো তার মূল কাজ। এমনকি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননাও ভুয়া।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, ইসরাত রফিক ইশিতা ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুধুমাত্র এমবিবিএস শেষ করেছেন।
২০১৪ সালের প্রথম দিকে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। এরপর একটি সরকারি হাসপাতালে চুক্তিতে কাজ করেন। তবে, চার মাস পর অনৈতিক কাজ করার অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
কিন্তু নিজের সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানী, গবেষক, পিএইচডি করেছেন এমন সব তথ্য প্রচার করতেন। করোনাকালে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট বিতরণও করেছেন।
২০১৭ সাল থেকেই মূলত পরিকল্পিত প্রতারণা কারবার শুরু করেন। নিজেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে টকশোও করে বেড়াতেন।
চিকিৎসা শাস্ত্রে কোনও উচ্চতর ডিগ্রি না থাকলেও তিনি নিজেকে এমপিএইচ, এমডি, ডিও ইত্যাদি ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচয় দিতেন।
তিনি প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া নথি উপস্থাপন করে ২০১৮ সালে জার্মানিতে ‘লিন্ডা ও নোবেল লরিয়েট মিট-মেডিসিন’ সম্মেলনেও অংশ নেন।
প্রতারক ঈশিতা কবিরের ঝুলিতে কমপক্ষে একশ’ সার্টিফিটেক রয়েছে- যার সবই জাল। ইশরাত রফিক ঈশিতার সহযোগী শহীদুল ইসলাম দিদারও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পরিচয় দিতেন। রিমান্ডে এই দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তারা।
একাত্তর/এআর