‘অলিগলি হালখাতা’ নামে গুলশানে প্রথমবারের মতো হয়ে গেলো বৈশাখী এক আয়োজন। শাহাবুদ্দিন পার্কে নাগরিক সমাজের দিন ব্যাপী আয়োজন মুখর ছিলো মন্ত্রী, আমলা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, শিল্পী আর সাধারণ মানুষের পদচারণায়। এর উদ্বোধন করে বছরের প্রথম দিন থেকেই পরিচ্ছন্ন নগর গড়ার আহবান জানান উত্তরের মেয়র।
রোববার বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কের বৈশাখী আয়োজনটি ছিল বেলা ১১টা থেকে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও দেখেছেন হালখাতা, চোখ রেখেছেন বাইস্কোপে। জানিয়েছেন মুগ্ধতার কথা।
চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা আর রমনার বটমূল থেকে অনেকেই সরাসরি চলে আসেন এখানে। আয়োজনের পরিবেশ আর পরিধি দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বাসিত তারা। সেই তালিকায় ছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, এই মেলায় সাধারণ একজন নাগরিক হিসেবে আমি পরিবারসহ মেলায় অংশ নিতে এসেছি।
নাচ-গান আর ঢোলের তালে আয়োজনের শুরুটা হয় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এসময় অতিথিরা জানান, চিন্তার সংস্কৃতির লেনদেন, আলাপ-উৎসব সবকিছু ঢাকা দক্ষিণ কেন্দ্রিক দেখা গেলেও উত্তরে তেমনটা দেখা যেতো না। এবার সেই নিয়ম ভাঙলো।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য অপরাজিতা হক বলেন, আবহমান কাল ধরে বাংলার যাত্রাপালা, কবিতা, গান, নাচ, আলপনায় রাঙানো রঙিন সংস্কৃতি এদেশের মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনারই বহিঃপ্রকাশ।
চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, সংস্কৃতির বলয় ভেঙে ঢাকা শহরের চৌহর্দি পেরিয়ে গ্রামে-গঞ্জে, মফস্বলে শহরে ছড়িয়ে গিয়েছে।
অলিগলি হালখাতার সমন্বয়ক এবং একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব এডিটোরিয়াল নূর সাফা জুলহাজ বলেন, এই আইডিয়া বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে পারে। এই আইডিয়া আমাদের কালচারাল কারেন্সি হতে পারে। আমাদের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের বড় জায়গা বাংলা নববর্ষ।
আয়োজনের উদ্বোধন করে উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, শহর পরিচ্ছন্ন রাখার শপথ নিয়েই শুরু হোক নতুন বছর। তিনি বলেন, মনের আবর্জনাকে যদি আমরা মুছে ফেলতে পারি, তাহলে কেউ শহরে আর আবর্জনা ফেলবো না; এটি হোক আজকের প্রতিজ্ঞা।
উৎসব সার্বজনীন। আর এই সার্বজনীন উৎসব তখনই পূর্ণতা পায়, যখন সেটি চার পাশে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এই উদ্দেশেই আজকের আয়োজন। আয়োজকরা প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, গ্রাম-গঞ্জ থেকে সারা বিশ্বে বাঙালির এই উৎসবকে ছড়িয়ে দিতে চান।
এর আগে রাতে চৈত্র সংক্রান্তির আলপনা উৎসব হয়েছিল এই এলাকায়। সেখানেও অংশ নিয়েছিলেন বিশিষ্টজনরা।