শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার বিশগিরি পাড়া বন বিভাগের বাগানের ঝোপের নীচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত নাছিমা বেগম উপজেলার মানিককুড়া গ্রামের আমির হোসেন মণ্ডলের স্ত্রী। আমির হোসেন পেশায় গ্রাম পুলিশ।
নাছিমার পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, নাছিমা সামান্য মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ছিলেন। মাঝে মাঝে মানিককুড়া গ্রাম থেকে হেন্ডেলের মোডে চা খেতে যেতেন তিনি।
শনিবার পড়ন্ত বিকেলে নাছিমা বাড়ি থেকে বের হন। পরে বাড়ি ফিরে না আসায় তাঁর স্বামী সন্তানরা বিভিন্ন জায়গায় তাঁর খোঁজ খবর করেন। শনিবার রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় রোববার থেকে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে নাছিমার খোঁজ করা হয়।
স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) আমির হোসেন নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। চারদিন অতিবাহিত হলেও নাছিমার কোন সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় পড়েন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বিশগিরিপাড়া বন বিভাগের সমতল বনে-জঙ্গলে নাছিমার সন্ধানে নামেন স্বজনেরা। এসময় জঙ্গলের উপরে কাকের ডাকাডাকি শুনে এগিয়ে আসেন নাছিমার মা গুলেরা বেগম। ঝোপের মাঝে মাটি ফুঁড়ে বেড়িয়ে থাকা মেয়ের অর্ধগলিত ও শেয়ালে কামড়ানো হাত-পা দেখে আঁতকে উঠেন তিনি। তার চিৎকারে ছুটে আসেন অন্যরাও।
খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আফরোজা নাজনীনসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধারে আসে সিআইডি, সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিট, র্যাব ও পিবিআই সদস্যরা। পরে আমির হাতে থাকা চুড়ি ও পড়নের কাপড় থেকে তার স্ত্রীর লাশ শনাক্ত করেন।
নাছিমার স্বামী গ্রাম পুলিশ আমির আলী জানান, শনিবার সারাদিন সংসারের কাজ সেরে সন্ধ্যার আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন নাছিমা। প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরিয়ে নাছিমা আশপাশে যেতেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্র হত্যায় একজনের ফাঁসি, চারজনের যাবজ্জীবন
নাছিমার পিতা নাদির আলী জানান, আমির আলীর প্রথম এবং দ্বিতীয় স্ত্রী একটি করে সন্তান রেখে মারা গেছেন। তৃতীয় স্ত্রী এক সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তার মেয়ে নাছিমা আমির আলীর চতুর্থ স্ত্রী এবং এ ঘরে পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে বেঁচে আছে চার সন্তান। বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ে এবং জামাতাসহ নাতিরা খুব সুখে আছে।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারে থানা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও র্যাবের টিম ঘটনাস্থলে আছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ ও অপরাধী শনাক্তে কাজ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
একাত্তর/এসজে