ইউক্রেন এবং জর্জিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। তিবিলিসিকে উপহার দেয়া বুক মিসাইল সিস্টেম ফেরত চাওয়ায় দু'পক্ষের মধ্যে সংকটের শুরু।
জর্জিয়া জানিয়েছে, বিনামূল্যে নয়, বুক সিস্টেম কিনে নিয়েছে তিবিলিসি। তাই ফেরত দেয়া হবে না। এছাড়া, আবারো রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে, সেই আশঙ্কায় ইউক্রেনকে কোনো সরঞ্জাম না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জর্জিয়া।
রুশ হামলা থেকে আত্মরক্ষায় ২০০৮ সালে জর্জিয়াকে বুক মিসাইল সিস্টেম পাঠায় ইউক্রেন। তা এখন ফেরত চাচ্ছে কিয়েভ। তিবিলিসির কাছে জ্যাভলিনও চেয়েছে ইউক্রেন।
জর্জিয়ায় ইউক্রেনের শীর্ষ কূটনীতিক আন্দ্রেই কাসিয়ানভ জানান, পুরানো জ্যাভলিন দিলে, তিবিলিসিকে নতুন প্রযুক্তির সরঞ্জাম দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র।
জবাবে জর্জিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেন থেকে বিনামূল্যে বুক মিসাইল সিস্টেম নেয়নি। গোপন চুক্তির আওতায় ক্রয়, তাই বিস্তারিত প্রকাশে অক্ষম।
যা তারা ফেরত দেবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়, কিয়েভকে কোনো অস্ত্র বা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে না। কারণ তা হলে, জর্জিয়াকে আবার লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে রাশিয়া।
তবে ইউক্রেনে রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা জারি থাকবে। এছাড়া কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়ে জ্যাভলিন অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল কেনা বলেও জানায় তিবিলিস।
জর্জিয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। ১৫ বছর আগে ৫ দিনের যুদ্ধে জর্জিয়াকে চূর্ণ করে দেয় রাশিয়া। দক্ষিণ ওসেটিয়া ও আবখাজিয়ায় গঠন করে বিদ্রোহী সরকার।
তারপর থেকে ন্যাটো ও পশ্চিমাদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করে জর্জিয়া। তিবিলিসের প্রত্যাখ্যান কিয়েভের জন্য অপমানের হতে পারে বোলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বয়ংক্রিয় স্যাম প্রযুক্তির বুক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্নায়ুযুদ্ধের সময় প্রকাশ্যে আসে। চলমান যুদ্ধে দু'পক্ষই ব্যাপকভাবে তা ব্যবহার করছে।
ধ্বংস করতে পারে মধ্যম উচ্চতায় থাকা শত্রুর বিমান, কপ্টার। রয়েল ইউনাইটেড ইনসটিটিউট জানায়, ২০২২ সালে রুশ যুদ্ধবিমানের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বুক সিস্টেম।
এছাড়া, ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন এস থ্রি হানড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যার কারণে উচ্চ উচ্চতায় উড়তে পারে না রুশ যুদ্ধবিমান।
স্থলবাহিনী ব্যবহার করেছ ম্যানপ্যাডস। যার কারণে নিচু দিয়েও উড়তে পারছে না রুশ বিমান। ইউক্রেনের আকাশ রুশ ফাইটারদের জন্য ইতোমধ্যে চালেঞ্জিং প্রমাণিত হয়েছে।
এ কারণে ক্রুজ মিসাইল আর ইরানের শাহেদ কামাকাজি ড্রোন দিয়ে হামলা করছে রাশিয়া। জ্বালানিখাত সচল রাখতে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অপরিহার্য ইউক্রেনের।
আরও পড়ুন: চীনে করোনায় এক মাসে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু
তাই পশ্চিমাদের কাছে বুক ছাড়াও আধুনিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম চাইছে কিয়েভ। সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য ৩৭৫কোটি মার্কিন ডলার সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যার মধ্যে অ্যান্টি-এয়ার সি স্প্যারো মিসাইল রয়েছে। যেগুলো যুক্ত হবে বুক-ওয়ান মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমে। তাছাড়া ট্যাংক আর কামান প্রতিদিনই পাঠাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।
একাত্তর/এসজে