দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসানকে। মঙ্গলবার হাজির হওয়ার কথা থাকলেও ফারাবি ও হাসান বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন। অন্যদিকে হাজির হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরও। তাকে আজই তলব করেছিল দুদক।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে, পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মাহমুদুল হাসান। আর, সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া এনসিপি নেতা গাজী সালাউদ্দিন তানভীর বলেছেন, অপরাধ প্রমাণ হলে জেলে যেতে প্রস্তুত তিনি। দুদক বলছে, প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই শেষ পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেবে কমিশন।
সারাদেশে ডিসি নিয়োগ, স্কুলের বই ছাপার কাগজ সরবরাহে কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে।
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এনসিপি নেতা তানভীর। তিনি বলেন, ডিসি নিয়োগ একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। যদি ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে কারও ভূমিকা থেকে থাকে, কেউ যদি সত্যি ডিসি নিয়োগ করে থাকে, সেটা মহাশক্তিশালী কাউকে হতে হবে, এটা একেবারে সম্ভাবনার বিপরীত জিনিস।
সকালে দুদকের তলবে হাজির হলে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সালাউদ্দিন তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক সহাকরী পরিচালক এসএম রাশেদুল হাসানের টিম।
তানভীরের দাবি, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন। এর কারণে আমাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় হতে হয়েছে। এর যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি জেলে যেতে রাজি বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমে এসেছে ১১০ কোটি টাকা, কাগজে ৪০০ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়, এটা হয় কীভাবে? কিছুদিন আগেও ২৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়টি এসেছে। যে কোনো অ্যাঙ্গেলে এর হিসাব খতিয়ে দেখা উচিত। এর সঠিকভাবে তদন্ত হওয়া উচিত।
গাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পর্ক অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। গত ১৫ মে তাকে দুদকে তলব করে চিঠি দেয়া হয়। গত ২১ এপ্রিল এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিবের পদ থেকে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় দলটি।
অন্যদিকে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গণমাধ্যমকে ফাঁকি দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান তুহিন ফারাবী। আর মাহমুদুল হাসান দাবি করেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। এরিমধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার পদ থেকে পদত্যাগের কথাও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সে সময় কথা বলেন দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। তিনি তখন সাংবাদিকদের জানান, এটি আমাদের আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি। দুদক এই জাতীয় যে কোনো অভিযোগের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট এই সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ বিষয়ে অগ্রগতি শিগগিরই জানানো হবে।