চাঁদপুরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আরও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- জেলার কচুয়া উপজেলার কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির শামীম হোসেন (২৮) ও পাড়াগাঁও গ্রামের সোহাগ হোসেন। যাবজ্জীবন সাজার আসামির নাম মো. রাব্বি হোসেন (২৮)। তিনি কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির বাসিন্দা।
হত্যার শিকার মাদ্রাসা ছাত্রের নাম মিলন হোসেন (১২)। সে কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে ও চাপাতলী মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মিলনের বাবার সঙ্গে আসামিদের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিলো। ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুরে মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। এরপর বাড়ি না ফেরায় পরদিন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তার ভাই মো. রিপন হোসেন।
দুই জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
বাদি রিপন জানান, স্থানীয়রা প্রথমে শামীমকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই জনের নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদের স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দুই জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামিদের থানা হেফাজতে নেয়।
ওই দিনই রিপন হোসেন বাদি হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের আট জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন ২২ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। আসামিদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
রায়ে শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডসহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর আসামি রাব্বিকে যাবজ্জীবন সাজাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অ্যাড. কামাল উদ্দিন।