লেবাননের সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুদ্ধবাজ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। ইসরাইলি মিডিয়ার বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পশ্চিমা মিডিয়ার দাবি, যুদ্ধবিরতি চুক্তির বেশ কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এই বিষয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। আর, যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো।
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের চাপের মুখে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতিতে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় নেতানিয়াহু সরকার। জেরুজালেম,ওয়াশিংটন ও বৈরুতের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে একাধিক ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আরো আলোচনা করতে হবে। তবে, তেল আবিব নতুন এই যুদ্ধবিরতির প্রধান প্রধান বিষয়গুলোতে অনুমোদন দিয়েছে।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, আমরা খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। তবে সবকিছু চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আর ইসরাইলি সরকার বলেছে, নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ‘ইয়েনেট’ বলেছে, ইসরাইলের মনোভাব লেবাননকে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ প্রধান নাইম কাসেম জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন প্রস্তাব আমরা পর্যালোচনা করেছি। স্পিকার নাবিহ বেরির মধ্যস্থতার মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। নাইম কাসেম আরো বলেছেন,‘বল এখন ইসরাইলের কোর্টে।
এছাড়া, লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিও তারা গ্রহণ করেছে। বিশেষ মার্কিন দূত আমোচ হোচস্টেইন গত সপ্তাহে বৈরুতে জেরুজালেম ও লেবানন সফর করে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
তিনি বলেছেন, সম্ভাব্য চুক্তিটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। সম্ভাব্য মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ। এটাকে পরীক্ষামূলক চুক্তি হিসেবে দেখা হবে। এর পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হতে পারে।
গেলো বছরের সাত অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন শুরু হবার পর থেকেই হামাস ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহ। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র হয়ে ওঠে। ইসরাইল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে এবং হিজবুল্লাহর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে। নিহত হন হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।