‘আর কাউকে ছাড় না দেয়ার নীতিতে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর রীতিমতো কাঁপতে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্প অঙ্গীকার অনুযায়ী অর্থনৈতিক সংস্কার করতে না পারলে পুরো বিষয়টি তার দলের জন্য কঠিন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হতে পরে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক ঘোষণা বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। মূলত দেশটির উৎপাদনখাত পুনরুজ্জীবিত করা, সাপ্লাই চেইন পরিবর্তন করা এবং কারখানাগুলোকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য সামনে রেখেই ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা এটা নির্ধারণ করেছেন। যা বাস্তবায়নে কয়েক বছর সময় প্রয়োজন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন চড়া শুল্ক বহাল থাকলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। আবার চড়া শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় অন্য দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করবে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিম্নমুখী হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
বর্তমানে রিপাবলিকানরা সামান্য ব্যবধানে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট নিয়ন্ত্রণ করছে। শুল্ক বিষয়ক ক্ষতির ফলে মধ্যবর্তী নির্বাচনে তারা এক বা উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। ফলে সে সময় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকলেও পার্লামেটে ডেমোক্র্যাটদের আধিপত্য বাড়তে পারে, বলছেন বিশ্লেষকরা।
তবে, আমদানি পণ্যের ওপর চাপানো শুল্কের বোঝা দিনশেষে বইতে হবে সাধারণ ভোক্তাকেই। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক জরিপে দেখা গেছে ৬২ শতাংশ রিপাবলিকান সমর্থকসহ মোট ৭০ শতাংশ মার্কিনি আশঙ্কা করছেন, শুল্কের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম চড়া হবে ।
জরিপে অংশ নেয়া এক রিপাবলিকান সমর্থক বলেন, আমি মনে করি শুল্ক দীর্ঘমেয়াদে আমাদের ক্ষতি করবে, কারণ ভোক্তাদের আরও বেশি মূল্য দিতে হবে। এটা অন্যান্য দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কেরও ক্ষতি করে। তাই এটা সবার জন্য নেতিবাচক হতে যাচ্ছে বলে আমার মনে করি।
অন্য একজন বলেন, এভাবে চলতে থাকলে অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্যবসা করতে চাইবে না। আমি এর কোন ইতিবাচক দিক দেখছি না। আমার মনে হয় এটা কোন ভালো পদ্ধতি নয়।
এদিকে, এরই মধ্যে চীনসহ কয়েকটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। তাই সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘আগ্রাসী শুল্ক নীতি’ দেশটির অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক ফেলতে পারে, বলছেন বিশ্লেষকরা।