বিদ্রোহীদের তৎপরতায় হামলা, সংঘর্ষে আবার অশান্ত হয়ে উঠছে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মনিপুর। গুলি বিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা, বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু, মণিপুর রাইফেলসের অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ নানা ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
গত কয়েক দিনে দফায় দফায় গুলিবিনিময় হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণের পাশাপাশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। মৃত্যু হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকের।
এরি মধ্যে মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এবং নিরাপত্তা ও যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলের পরিস্থিতি ছিলো উত্তপ্ত। বিদ্রোহী কুকিরা কোতুর্ক নামে একটি গ্রামে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে বেশ কয়েকটি অবকাঠামোর।
কিন্তু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের জোগান কারা দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুরের দুটি আবাসিক এলাকায় দূরপাল্লার রকেট মোতায়েন করেছে। বিষ্ণুপুরে ড্রোন হামলায় আরকে রাবিই নামের ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন।
ড্রোন হামলা কুকি বিদ্রোহীরা চালাচ্ছে বলে মনে করছে পুলিশ। আর এসব হামলা চালাচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া কুকি বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের দমনে পালটা অভিযান চালাতে সরকারি বাহিনীগুলোর প্রতি কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সশস্ত্র হামলার পাশাপাশি ইম্ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ শুরু করেছে। পাশাপাশি শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তারা।
কুকি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা কর্মরত সংগঠনের পক্ষ থেকে হাতজালহই হাওকিপ বলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে কুকি গোষ্ঠীর মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে সে বিষয়ে রাষ্ট্র নীরব রয়েছে। আমরা দিল্লিতে কেন্দ্র সরকারকে আমাদের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। এই মুহূর্তে মণিপুরে যা হচ্ছে তা খুবই চিন্তার। কুকিদের ওপর অত্যাচার চলছে এখনো। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না।