ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও এ পরিস্থিতিতে ‘যে কোনো পদক্ষেপের জন্য’ মোদী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে দেশটির বিরোধীদল।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির সংসদ ভবনে সর্বদলীয় বৈঠক শেষে বিরোধীদল নেতা রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বৈঠক শেষে লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, সকল রাজনৈতিক দল একযোগে এর নিন্দা করেছে এবং বিরোধী দল সরকারকে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসুক।
তিনি জানান, বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী আগামীকাল (শুক্রবার) কাশ্মীরের অনন্তনাগ পরিদর্শন করবেন, যেখানে আহতদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কেন্দ্রের সাথে আছি। দেশের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করা। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রধানরা প্রধানমন্ত্রীকে একটি বার্তা দিয়েছেন।
এদিন বৈঠকে অংশ নেয়া সংসদ সদস্যদের কোথায় এই ত্রুটি ঘটেছে এবং কোন পরিস্থিতিতে এই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে সে সম্পর্কে অবহিত করেছেন ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি) এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।
এর আগে মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ২৬ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হন।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিলো পাঁচ-ছয় জন। সকলের মুখেই ছিলো মাস্ক। হাতে ছিলো একে ৪৭ রাইফেল। আচমকাই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে সন্ত্রাসীরা।
এ হামলার দায় স্বীকার করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘দ্যা রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির আবহে জন্ম হয় এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর। পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-ত্যাইয়েবার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। পেহেলগামের হামলাকারীরা টিআরএফের সদস্য বলেই দাবি করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।
দিল্লির অভিযোগ, এ হামলার পিছে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। যদিও পাকিস্তান সরকার তা অস্বীকার করেছে।
হামলার জেরে, বুধবার ভারতের মন্ত্রিপরিষদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি বাতিলসহ বড় ধরনের পাঁচটি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। পরের দিনও থেমে নেই নয়াদিল্লি।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় মেডিকেল ভিসাসহ পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত।
অন্যদিকে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করেছে পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, ভারতকে আর পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।