তিস্তা প্রকল্পে ভারত বা চীন- যাদের কাছ থেকে ভালো সহযোগিতা পাওয়া যাবে, তাদের সঙ্গেই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
তিস্তার পানিবণ্টন জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ওপেন আছি। ভারতের সঙ্গে সহযোগিতায় থাকা সম্ভব আবার চীনের সঙ্গে থাকা সম্ভব। কারও সঙ্গে কোনো বাধা নেই। আমরা দেখবো যে, কোন প্রজেক্টটা নিলে আমাদের জন্য সহজ হবে, সেটা নিয়ে কাজ করা হবে।
চীন এবং বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে তিস্তার পানি নিয়ে আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, অগ্রগতি সময়সাপেক্ষ। হঠাৎ করেই আমরা প্রত্যাশা করছি না যে, কেউ এসে এটা দ্রুত সমাধান করে দিয়ে যাবে। তিস্তার পানিবণ্টন জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি আমরা জানি। বিশেষ করে মৌসুমের সময়। এ ব্যাপারে ওপেন থাকা, সেটা আমরা আছি।
এসময় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হলেও তা চূড়ান্ত কিছু নয় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বলেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন- সম্পর্ক হয় দেশ ও জনগণের সঙ্গে, ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে নয়। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে আপত্তিকর বক্তব্য পরিহারের বিষয়ে একমত হয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারপ্রধান।
ইতালি প্রবাসীদের ভিসার বিষয়ে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদেরও কিছু সমস্যা আছে। যেসব আবেদন জমা পড়েছে তাতে অনেক ত্রুটি রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। তারা সেসব পর্যবেক্ষণ না করে ভিসা/ ওয়ার্ক পারমিট দিতে পারবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে সমাধান নয়, তবে ইতালিকে চাপে রাখা হয়েছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রটেস্টের নামে যে লুটপাট হচ্ছে তা সরকার সমর্থন করে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, লুটপাট কোনো প্রতিবাদের ভাষা নয়। যারা এমন কাজ করছে, তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে। দেশে যখন বিনিয়োগ সম্মেলন চলছে, তখন ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনের নামে লুটপাটকে পরিকল্পিত বলে মনে করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের ফেরানোর ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা যেন অধিকার ও নিরাপত্তাসহ ফেরত যেতে পারে সেটাই চায় বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের বৈঠকে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনযোগ্য, এটা মায়ানমার পরিষ্কার বলেছে। বাকি তালিকা তারা রিভিউ করছে। আমরা তাদের দাবি জানিয়েছি বাকি যারা আছে, তাদের ফেরানোর ব্যাপারে যেন ত্বরান্বিত করে। এই তালিকা অনুমোদন করা মানে এই নই যে কালকে তারা চলে যেতে পারবে। রাখাইনে বাস্তব অবস্থা আমরা সেটা জানি। এই অবস্থায় তাদের প্রত্যাবাসন করা সম্ভব নয়। তবে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টির কাজ করে যাচ্ছি।
এছাড়াও চলতি মাসেই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের দুই জন প্রতিনিধি ঢাকা সফর করবেন বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।