ব্রাজিলের আমাজনের একটি শহরে বিশালাকার গর্ত বা সিঙ্কহোলের সৃষ্টি হয়েছে। এই গর্ত কয়েকশ বাড়ি গ্রাস করে ফেলতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সেখানে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
আমাজনের মারানহোর বুরিতিকুপু নামে শহরটির বেশ কয়েকটি ভবন ইতোমধ্যে সিঙ্কহোলে বিলীন হয়ে গেছে। ৫৫ হাজার বাসিন্দার শহরটির প্রায় ১২শ’ বাড়ি এসব গর্তের কারণে ধ্বংস হবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরটিতে এরই মধ্যে কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। তবে, এই বিপর্যয়ের পেছনে প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট কারণকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভয়াবহ সঙ্কটের মুখে পড়েছে আমাজন বনাঞ্চলের বুরিতিকুপু শহর। মাটি ক্ষয়ে বিশাল এক গর্ত বা বিশালাকার সিঙ্কহোল তৈরি হওয়ায় বাড়ি-ঘর হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন হাজারো মানুষ।
এ মাসের শুরুতে সেখানকার স্থানীয় সরকার একটি ডিক্রি জারি করে। এতে বলা হয়, গত কয়েক মাসের মধ্যে সিঙ্কহোলটির পরিধি বিস্তৃত হয়েছে, যা এখন আবাসিক ভবনের দিকে এগোচ্ছে।
পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে স্থানীয় সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছে। ভূ-প্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বালুকাময় অঞ্চলে এমন বিপর্যয়ের মূল কারণ অতিবৃষ্টি, বন উজাড় আর দুর্বল অবকাঠামো নির্মাণ।
শহরের বাসিন্দারা বলছেন, সম্প্রতি ভারী বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি বন উজাড় করে অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজও ভূমিধসের জন্য দায়ী। অনেকদিন ধরে চললেও এখন সমস্যা ভয়াবহ।
ব্রাজিলের এই শহরটিতে ৫৫ হাজার মানুষের বাস। ব্রিটিশ দৈনিক দ্যা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মধ্যে ১ হাজার ২শ’ জন বাসিন্দা তাদের বসতঘর হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।
গর্তের আকার বড় হতে হতে ক্রমে আবাসিক এলাকার দিকে এগোচ্ছে। সেখানের এক বাসিন্দা বলেন, বিপদ আমাদের সামনে। কখন যে ঘরবাড়ি মাটির নিচে চলে যায় সে বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারছি না।
বুরিতিকুপু শহরটিতে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে থাকছেন ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ অ্যান্তোনিয়া দোস অ্যাঞ্জস। তিনি জানান, সিঙ্কহোল নিয়ে তারা সবাই আতঙ্কিত। শহরটির পূর্ত সচিব জানিয়েছেন, তাদের কাছে এ সমস্যার সমাধান নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন নীতির অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে শহরটি আরও বড় বিপর্যয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
ভূগোলবিদ ও মারানহাউ ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্সিলিনো ফারিয়াস বলেছেন, ভারী বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। মূলত বৃষ্টির কারণে মাটি ক্ষয়, বন উজাড় করে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণে বাড়ছে সিঙ্কহোলের বিস্তৃতি।