ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে বলে ইরানি এক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিবিসির খবরে রাষ্ট্রীয় টিভির বরাতে বলা হয়েছে ধ্বংসাবশেষস্থলে ‘প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই’।
এর আগে সোমবার সকালে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারের খোঁজ পায় ইরানের রেড ক্রিসেন্ট।
তবে, সংস্থাটির পক্ষ থেকে এখনো প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীরা বেঁচে আছেন কি না সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।
এদিকে পরিস্থিতি ‘ভালো নয়’ বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান পিরহোসেন কলিভান্দ।
এর আগে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার এলাকায় একটি ‘হিট সোর্স’ (উত্তপ্ত স্থান) শনাক্ত করেছে তুরস্কের পাঠানো ড্রোন।
তবে, এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বা তার সফরসঙ্গীদের অবস্থা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ধারণ করা হচ্ছে, হেলিকপ্টারটি যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। এরিমধ্যে রাইসিকে বহন করা হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় পড়ার পর ১২ ঘন্টারও বেশি সময় পার হয়ে গেছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার বহন করছিল। এই মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি।
১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পরে যুক্তরাষ্ট্রের এটি ইরানের কাছে বিক্রি করার কথা নয়। সে হিসেবে উড়োযানটি অন্তত ৪৫ বছরের পুরনো।
এর আগেও আকাশপথে দুর্ঘটনায় দেশটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন সময়ে পরিবহনমন্ত্রী, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার বিমান বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন।
সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।
পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে হয়েছে, মূলত বৈরী আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, যা–ই ঘটে থাকুক না কেন, রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে না। ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত খামেনির কাছ থেকেই আসে।