ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন। রোববার মাঝ আকাশ থেকে নিখোঁজ হয় রাইসির কপ্টার। পরের দিন সোমবার সকালে ভেঙে পড়া হেলিকপ্টারের খোঁজ পেলেও ধ্বংসস্তূপে কোনও প্রাণের চিহ্ন নেই বলে রাইসির মৃত্যুর খবর সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, কপ্টারের যেখানে ভেঙে পড়েছে, সেই জায়গাটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। জোলফার পার্বত্য অঞ্চলে ভেঙে পড়েছিল সেটি। দুর্ঘটনাস্থলে কপ্টারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলেও প্রাণের কোনও চিহ্ন মেলেনি। রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ হেলিকপ্টারে যে ৯ জন ছিলেন, সকলেরই মৃত্যু হয়েছে।
রোববার আজারবাইজানে বাঁধ উদ্বোধন করতে যান রাইসি। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার। ঘন মেঘের আড়ালে হঠাৎ হারিয়ে যায় কপ্টারটি। সারা রাত জুড়ে তল্লাশি অভিযান চলে। পরের দিন সকালেও উদ্ধারকাজ চলে। ঘণ্টাখানেক পরেই জানানো হয়, দুর্ঘটনাস্থল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায় কপ্টার। ধ্বংসস্তূপে প্রাণের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এর কিছুক্ষণ পরেই তেহরান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট রাইস ও তাঁর সফর সঙ্গীদের মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। নিহত সবার মরদেহ তাবরিজে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রেড ক্রিসেট সংস্থা।
মৃত্যুর আগে হেলিকপ্টারে উঠে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, ভিডিও প্রকাশ করেছে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা। ভিডিওটির শুরুতেই দেখা গেছে, কপ্টারের জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রয়েছেন রাইসি। উল্টো দিকে বসে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান।
এর পর ক্যামেরাটি প্যান করে চপারের ভেতরের অংশ দেখানো হয়েছে। সেখানে বসে রয়েছেন ইরানের অন্য সব কর্মকর্তারা। এরমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আবদুল্লাহিয়ান ক্যামেরা দিকে তাকাতে দেখা গেছে। এরপরই ক্যামেরাটি জানালা গলে নিচের ভূমির দৃশ্যধারণ করতে দেখায় যায়।
আরও একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করা হয়েছে, যেটি চপারে ওঠার প্রায় ৩০ মিনিট আগের। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে রাইসিকে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে। এরই ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয় হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ। কপ্টারটি ওড়ার আধ ঘণ্টা পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিলো।
প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর একটি পাহাড়ের মাথায় কপ্টারের ভগ্নাবশেষ মেলে। ইরানের জাতীয় টিভি চ্যানেল জানায়, ইরানের সেবক আয়াতুল্লাহ ইব্রাহিম রাইসি দেশের মানুষের সেবা করতে করতে শহিদ হয়েছেন। চপার ভেঙে পড়াকে ‘দুর্ঘটনা’ বলেই জানিয়েছে ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।