ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার ‘দুর্ঘটনায়’ পড়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, যে হেলকপ্টারটি ‘হার্ড ল্যান্ডিংয়ের’ শিকার হয়েছে তাতে প্রেসিডেন্ট রাইসি ছিলেন। ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ইরানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ওই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিলো। যার দুটি ফেরত এসেছে।
হার্ড ল্যান্ডিংয়ে যাওয়া কপ্টারটিতে ইরানি প্রেসিডেন্ট ছিলেন কি না তা প্রথমে নিশ্চিত ছিলো না। তবে বহরের বাকি দুটি হেলিকপ্টার ফিরে আসায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এখন অনেকটাই নিশ্চিত যে ওই চপারে রাইসি ছিলেন।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, বিভিন্ন উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে, তবে কুয়াশা এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
ইরানের সংবাদ সংস্থা- ইরনা জানিয়েছে, একদিন আগে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দেখা করতে দেশটিতে উড়ে যান প্রেসিডেন্ট রাইসি। ইরান-আজারবাইজানের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি বাঁধের উদ্বোধন করেন তারা। এরপর ফেরার পথে, দুর্ঘটনার মুখে পড়ে কপ্টারটি।
রাইসির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এবং ওই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম এবং পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি একই কপ্টারে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জ্বালানি মন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ান এবং আবাসন ও পরিবহন মন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ নিরাপদে ফিরে আসা হেলিকপ্টার দুটিতে ছিলেন।
আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী শহর জোলফা ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। তবে, ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো একে দুর্ঘটনা বলতে চাচ্ছে না। তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি জোলফার কাছে এক জায়গায় ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ করেছে। অর্থাৎ, জোরালোভাবে অবতরণ করেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজান থেকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। যেখানে কপ্টারটি দুর্ঘটনায় পড়েছে সেই জায়গা তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে।
জোরফার গভর্নর জেনারেল জানান, ওই এলাকায় গাঢ় কুয়াশা ছিলো। কুয়াশার কারণেই ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ করতে বাধ্য হয় হেলিকপ্টারটি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী দল প্রেসিডেন্ট ও অন্যদের উদ্ধার করতে ওই এলাকায় পৌঁছেছে। কিন্তু, কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
কয়েকটি পশ্চিমা গণমাধ্যমের দাবি, কপ্টারটি হার্ড ল্যান্ডিং করার পর গুরুতর আহত হয়ে থাকতে পারেন ন ইব্রাহিম রাইসি। তবে, দুর্ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাইসির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তেহরানের কন্ট্রোল রুম থেকে হেলিকপ্টারের ক্রুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। কিন্তু, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ওই এলাকায় বড় মাপের অনুসন্ধান অভিযান চলছে।
ফারস নিউজ এজেন্সির একজন প্রতিবেদকের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, দুর্ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেই এলাকা পাহাড়ি। কুশায়ার কারণে পাঁচ মিটার দূরেও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না।