ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ২৬টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
এছাড়া রোববার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালার যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি জলোচ্ছ্বাসে বহু বন্যপ্রাণীও ভেসে গেছে। দুইদিন ধরে জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ ডুবে যাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে বন্যপ্রাণীরা এদিক থেকে সেদিকে ছুটে বেরিয়েছে।
মঙ্গলবার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা জামতলা এলাকা থেকে ২৬টি মৃত হরিণ উদ্ধারের পাশাপাশি আরও ১৩টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া বনের মধ্যে থাকা ৮০টি পুকুরে লবণ পানি ঢোকায় মিষ্ট পানির উৎস নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে বন বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ের অবকাঠামোর।
বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে। তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার এবং সোমবার দিনে ও রাতে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারে চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়। বনের মধ্যে দিয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়।
মিহির কুমার দো আরও জানান, বন বিভাগের সদস্যরা যেসব হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। বনজ সম্পদ এবং বন্যপ্রাণীর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে বন বিভাগের সদস্যরা কাজ করছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, পানির কারণে বনের বিভিন্ন এলাকায় হরিণ শাবক মারা গেছে। বন বিভাগের সদস্যরা বনের বিভিন্ন এলাকায় মৃত অবস্থায় হরিণ শাবক দেখতে পাচ্ছে। হরিণ মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাগর এখনও উত্তাল থাকায় বন বিভাগের সদস্যরা ঠিকভাবে সব কাজ করতে পারছেন না।
ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার প্রথমে সুন্দরবনে আঘাত হানে। এরপর দীর্ঘসময় ধরে উপকূলে থেকে এটি অতিক্রম করে। রিমালের প্রভাবে রোববার দুপুর ও রাতে এবং সোমবার দুপুরে নদ-নদীতে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। প্লাবিত হয় সুন্দরবন।
রোববার সন্ধ্যায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সুন্দরবন দিয়ে উপকূলে আঘাত হানে রিমাল। জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলাসহ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন এলাকা। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক লাখ মানুষ।