ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরাইলের সবচেয়ে বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ হামাসকে একটি সামরিক শক্তিতে পরিণত করার পেছনে তার অবদানই সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়। ফলে তার মৃত্যু নিশ্চিতভাবেই হামাসের জন্য বড় ধাক্কা।
তবে সিনওয়ার নিহত হবার পর হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য খালেদ মেশাল সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে একাধিক সংবাদমাধ্যম। যদিও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানায়নি হামাস, শুধু সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে খালেদ মাশাল এখন ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় জড়িত মূল দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। একই সঙ্গে হামাস পুনর্গঠনে কাজ করে যাবেন।
ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর থেকেই বহুবার হামাসের প্রধান হিসাবে খালেদ মেশালের নাম ঘুরে ফিরে অনেকবার আসলেও, শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ছিলেন খালেদ। পরে এই পদে আসেন হানিয়া।
তবে, হানিয়ার মৃত্যুর পর মনে করা হচ্ছিলো হামাসের প্রধান হতে পারেন খালেদ। শেষমুহূর্তে কৌশল পাল্টে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় শত্রু সিনওয়ারকে হামাস প্রধান করা হয়। গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলের সিনওয়ার। তখন থেকেই তাকে খুঁজছিলো ইসরাইল।
খালেদ মেশাল ১৫ বছর বয়স থেকেই প্রতিরোধ আন্দোলনে পা রাখে। যোগ দেন ব্রাদারহুডে। ১৯৫৬ সালে রামাল্লায় জন্ম নেয়া খালেদ হামাস প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনে রয়েছেন। ১৯৯৬ সালে মেশালকে যখন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান করা হয়, তখন থেকেই তাকে হত্যার চেষ্টায় জাল বোনে ইসরাইল।
ইসরাইলের গুপ্তচর ও ঘাতকরা বহু চেষ্টার পরও খালেদ মেশালকে হত্যা করতে পারেননি। জর্ডনে তাকার মেশালকে বিষের ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন এক ইসরাইলি গুপ্তচর। কিন্তু তবুও মারতে পারেননি মেশালকে। তারপর সেই গুপ্তচর জর্ডন থেকে আর পালিয়েও যেতে পারেনি।
খালেদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে বিষের অ্যান্টিডোট দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে বড় পদক্ষেপ নেয় জর্ডান। এটি ঘিরে জর্ডন ও ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্কও প্রভাবিত হয়। ততক্ষণে কোমায় চলে যাওয়া খালেদ আবার সুস্থ হতে থাকে। সেই থেকেই খালেদ মেশালকে ‘জীবন্ত শহিদ’ বলে থাকেন অনেকে।