ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ হত্যায় তার অবস্থানের তথ্য সরবরাহ করেন এক ইরানি গোয়েন্দা এবং এরপর সে অবস্থান লক্ষ্য করে ফেলা হয় ৮০টি বোমা!
শুক্রবার বৈরুতে ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক হামলায় নাসারুল্লাহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লা প্যারিসিয়ান।
প্যারিসিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসরুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তার অবস্থানের তথ্য ইসরাইলকে জানিয়েছে ইরানের এক গুপ্তচর।
লেবানের নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই গুপ্তচর ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে জানায় যে বৈরুতে হিজবুল্লাহর আন্ডারগ্রাউন্ড সদরদপ্তরে সংগঠনটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সদস্যের সঙ্গে নাসরুল্লাহ বৈঠক করবেন।
তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর অবস্থান কয়েক মাস ধরেই জানতো ইসরাইল। ইসরাইলি তিনজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে, ইসরাইলি রিপোর্টে বলা হয়েছে, নাসরুল্লাহকে হত্যার জন্য অভিযান চালাতে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হয়নি। অভিযানের এ সিদ্ধান্ত যখন নেওয়া হয় তখন লেবাননে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসরাইলি নেতাদের আলোচনা চলছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে যান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলি দুই কর্মকর্তা জানান, লেবাননের দক্ষিণ বৈরুতে এ অভিযানে ৮০টির বেশি বোমা ফেলা হয়। এতে ছয়টি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে।
শুক্রবার চালানো এ হামলার পর পরই ইসরাইলি বাহিনী হাসান নাসরুল্লাহর নিহতের খবর নিশ্চিত করলেও হিজবুল্লাহ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষমেশ শনিবার সকালে এক বিবৃতিতে তারা হিজবুল্লাহ প্রধানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। এ হামলায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির দক্ষিণ ফ্রন্টের কমান্ডার আলী কারাকিও নিহত হয়েছেন।
এদিকে, নাসারুল্লাহ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল হারজি হ্যালেভি এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘এখানে বার্তা খুব পরিষ্কার। ইসরাইলি নাগরিকদের যারা হুমকি দেবে, তাদের কীভাবে খুঁজে বের করতে হয়, সেটা আমরা জানি। সেটা উত্তরে, দক্ষিণে কিংবা আরও দূরে হলেও আমরা তাদের খুঁজে পাবো।’