যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের আহ্বান জানানো লেবাননে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ। উত্তরে কোনও যুদ্ধবিরতি হবে না বলে বৃহস্পতিবার এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন তিনি।
এক্স পোস্টে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্য সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে লড়াই করব।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের সমাবেশ শেষে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কয়েকটি মিত্র দেশ ইসরাইল-লেবানন সীমান্ত জুড়ে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানায় এবং একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির কার্যকরেরও প্রস্তাব দেয় দেশগুলো।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিও আশা করেছিলেন শীঘ্রই একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হবে। কিন্তু এখন ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে লেবাননে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুললো এবং স্থল আক্রমণের আশঙ্কা সৃষ্টি করলো।
জাতিসংঘে ভাষণ দিতে নিউইয়র্কে যাওয়ার সময় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, তিনি এখনও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাননি। বরং সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসরাইল সরকারের কট্টরপন্থিরাও মনে করেন, তাদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা উচিত এবং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া উচিত।
এদিকে, ইসরাইলের উত্তরেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। রাতভর বেকা উপত্যকা এবং দক্ষিণ লেবাননের প্রায় ৭৫টি হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে বিশেষ করে অস্ত্রের গুদাম ও লঞ্চারে বিমান হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। বৃহস্পতিবার সকালেও তারা হিজবুল্লাহর বহু লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালিয়েছে তারা, যার মধ্যে সন্ত্রাসী, সামরিক ভবন ও অস্ত্রাগার রয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পশ্চিম গ্যালিলি অঞ্চলে লেবানন থেকে প্রায় ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে এবং বাকিগুলো খোলা মাঠে আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে তারা।
সবশেষ লেবাননের ইউনিনে শহরে তিনতলা একটি ভবনে আঘাত হেনেছে ইসরাইলি বাহিনী। এ হামলায় ২৩ সিরিয়ান নাগরিক নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু ছিল বলে জানিয়েছেন শহরটির মেয়র আলি কুসাস। লেবানন সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে প্রায় দেড় মিলিয়ন সিরিয়ান শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছিলেন।