মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশায় মস্কো ব্যথিত’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন একটি রাষ্ট্র সৃষ্টির আকাঙ্খাকেও মস্কো সমর্থন করে।
মঙ্গলবার মস্কোতে দুই নেতার মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ক্রেমলিন এ বৈঠক সম্পর্কে জানায়, ‘চলমান ফিলিস্তিন-ইসরাইল অস্থিরতা ও গাজা উপত্যকায় ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয়ের আলোকে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পুতিন বলেন, ইউক্রেনে নিজেদের যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলীর দিকে নজর রাখছে। বৈঠক নিয়ে ক্রেমলিন একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে।
আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেছেন, ‘সবাই ভালভাবেই জানে রাশিয়াকে দুঃখজনকভাবে হাতে অস্ত্র নিয়ে নিজেদের স্বার্থ ও জনগণকে রক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে কি হচ্ছে, ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে, সেটিও আমাদের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে না।’
‘আর আমরা খুবই বেদনা আর উদ্বেগ নিয়ে ফিলিস্তিনে নেমে আসা এক মানবিক বিপর্যয় লক্ষ্য করছি’, বলে উল্লেখ করেন পুতিন।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠককালে আব্বাস বলেন, ‘রাশিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুদের একজন। আমরা আপনাদের বিশ্বাস করি, আপনাকে বিশ্বাস করি। আপনার সমর্থনও অনুভব করতে পারি আমরা।’
ইসরাইল গাজায় যেসব মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তা বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একজন হিসেবে রাশিয়াকে ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান আব্বাস।
গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যেই হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহ হত্যায় মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়েছে বহুগুণে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে আঞ্চলিক অস্থিরতা প্রশমনে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার এক রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আসেন আব্বাস। বুধবার পর্যন্ত সেখানেই থাকবার কথা রয়েছে তার। এরপর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সাথে আলোচনার উদ্দেশে আঙ্কারা সফর করবেন মাহমুদ আব্বাস।
রাশিয়ার সঙ্গে ফিলিস্তিন এবং ইসরাইল উভয়েরই দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আছে। কিন্তু গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কো হামাস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করায় এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোয় ইসরায়েল নাখোশ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার জন্য মস্কোর পক্ষ থেকে একাধিকবার পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করা হয়।