ইসরাইলি বাহিনী মিশরের সীমান্ত বরাবর দক্ষিণ গাজার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফিলাডেলফি করিডোর ছাড়বে না বলে আবারও জোর দিয়ে বলেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জেরুজালেমে বিদেশী মিডিয়ার সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
বিদেশী মিডিয়াকে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি ভবিষ্যতের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসাবে গাজা-মিশর সীমান্তে ইসরাইলি সেনাদের উপস্থিতির বিকল্প বিবেচনা করার জন্য ‘উন্মুক্ত’, কিন্তু, তিনি এমন কিছুই ঘটতে দেখেননি।
তিনি যুক্তি দেখান যে, অস্ত্র এবং ইসরাইলি জিম্মিদের সীমান্ত পেরিয়ে পাচার ঠেকাতে ইসরাইলি সেনাদের অবশ্যই এই বাফার জোনে থাকতে হবে।
এদিকে, হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, নেতানিয়াহুর ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ব্যর্থ করার একটি প্রচেষ্টা। ইসরাইলের ওপর আরও চাপ দেওয়ার সময় এসেছে বলেও জানায় তারা।
এর আগে, বুধবার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যেকোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ‘কোনো পরিস্থিতিতেই ফিলাডেলফি করিডোরে ছিদ্র করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দেখাতে পারে, কাগজে নয়, কথায় নয়, স্লাইডে নয়, বরং মাটিতে, দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস, তারা আসলে আমাদের আগে সেখানে যা ঘটেছিল, তার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারে। তাহলে সেটা বিবেচনার জন্য উন্মুক্ত।’ ‘আমি এটি ঘটতে দেখছি না এবং এটি না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেখানে আছি’, বলেন নেতানিয়াহু।
এটিকে ‘রেড লাইন’ হিসেবে উল্লেখ করে ‘ইসরাইলি বাহিনী গাজার দক্ষিণ সীমান্ত ত্যাগ করবে না’ বলে বারবার জোর দিয়ে তার মন্তব্যের সমর্থনে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য সেখানে সৈন্য রাখা দরকার।
তার এমন দাবি যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিটিকে মেরে ফেলবে- এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, ‘এবং আমি বলি: এই ধরনের একটি চুক্তি আমাদের হত্যা করবে।’ গত সপ্তাহে হামাস ছয় জিম্মিকে হত্যার পর আরও ছাড় দেওয়া হবে ‘অযৌক্তিক, অনৈতিক এবং পাগলামি’, বলেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের রেড লাইন আছে। তা বদলায়নি। আমরা তা ধরে রাখব।’
এদিকে, তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীসহ তার নিরাপত্তা প্রধানরা সীমান্তে সামরিক উপস্থিতির বিকল্পগুলিকে সমর্থন করেছেন। যেমন সেখানে কার্যকলাপ নিরীক্ষণের জন্য প্রযুক্তিগত সমাধান, বা মিত্র বাহিনীর উপস্থিতি।
ইসরাইলি মিডিয়ায় ফাঁস, প্রধানমন্ত্রী এবং তার প্রতিরক্ষা প্রধানদের মধ্যে বৈঠকে চিৎকারের চেঁচামেচির ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে কোনো চুক্তি না চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক বিশ্বাস করে যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সময়ের জন্য খেলছেন এবং তার আসল লক্ষ্য যুদ্ধ শেষ করার আগে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে খুঁজে বের করা এবং তাকে হত্যা করা। নেতানিয়াহু এসব অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি অসাধারণ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষা করে চলেছেন। এবং হামাসই চুক্তিতে বাধা দিচ্ছে।